বিগত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে লামা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বড় ধরনের বন্যার আশংকা করছে এলাকাবাসী।পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার মানুষ।অনেকের ঘরবাড়ি এখন পানির নিচে।উপজেলার বেশ কিছু জায়গায় পাহাড় ধস ও সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় সমগ্র দেশের সাথে লামার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলা চলে।বৈরি আবহাওয়ার কারণে গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুতের লাইনের উপর পড়ায় কয়েক স্থানে খুঁটি পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করছে লামা বিদ্যুৎ বিভাগ।নদী,খাল ও ঝিরি গুলোতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।ইতিমধ্যে লামা পৌরসভার নয়াপাড়া, উপজেলা কোয়ার্টার,চেয়ারম্যান পাড়া,বাজার এলাকা,লাইনঝিরি,লামামুখ ও ছোট নুনারবিল সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।পৌরসভার লামা-রুপসীপাড়া সড়কের কাটা পাহাড় নামক স্থানে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।খবর পাওয়া মাত্রই লামা পৌরসভার মেয়র মো.জহিরুল ইসলাম ডাম্পার ও লেবার নিয়ে নিজে উপস্থিত হয়ে মাটি সরিয়ে আন্তঃসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করেন।মেয়রের এমন সেবাধর্মীয় কাজ দেখে অনেকে ফেইসবুকে প্রশংসামূলক পোস্ট করেছেন।এছাড়াও লামার ৫ ইউনিয়নের অসংখ্য জনবসতি পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে।খাল ও ঝিরির প্রচন্ড পানির স্রোতে ভেঙ্গে পড়েছে কয়েকটি ব্রিজ।আন্তঃ যোগাযোগের সড়ক গুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার মানুষ।লামা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাপান বড়ুয়া জানান,গত কয়েকরাত হতে বন্যার আশংকা করে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে লামা বাজারের ব্যবসায়ীরা।গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে নিম্নাঞ্চলে পানি উঠার কারণে বন্যার আশংকায় মালামাল সরাতে ব্যস্ত সময় পার করছে সব ব্যবসায়ীরা।এতে করে প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।ইতিমধ্যে বাজারের প্রধান প্রধান কয়েকটি গলি ও সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।লামার বন্যা সমস্যা নিরসনে স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।লামা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন,উপজেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় চুড়া ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনতে আমরা কাজ করেছি।উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঝুকিঁপূর্ণ এলাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন,দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা সচেষ্ট রয়েছি।যে কোন দূর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র সহায়তা দেয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।দুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন,শুষ্ক মৌসুমে মৃত প্রায় মাতামুহুরী নদী বর্ষা এলেই রুদ্রমুর্তি ধারণ করে।সাধারণ মানুষের বিপদের সময় আমরা পাশে থাকার চেষ্টা করছি।জনদুর্ভোগ লাঘবে আমরা আন্তরিকভাবে জনসাধারনের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি মহোদয় প্রতি মুহুর্তে লামার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং দুর্ভোগে পরা বন্যা দুর্গতদের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.