লামায় আদালতের জিম্মায় থাকা ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর উধাও


প্রকাশের সময় :১২ মে, ২০১৮ ৮:০৮ : অপরাহ্ণ 657 Views

মোঃরফিকুল ইসলাম (লামা) বান্দরবানঃ-বান্দরবানের লামায় অবৈধ পাচারকালে বিজিবি’র সহায়তায় ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।উক্ত জব্দকৃত মালিক বিহীন পাথর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নিলামের অনুমতি চেয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করে লামা থানা পুলিশ।বিজ্ঞ আদালত এই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়ার আগেই জব্দকৃত ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর উধাও হয়ে গেছে।উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর এলাকায় ১১ মে ২০১৮ইং শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে মজুদকৃত পাথরের স্থান সমূহ খালি দেখা যায়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,গত ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ইং লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর এলাকায় বিজিবি ত্রিশডেবা ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে ৩টি স্টকে অবৈধ মজুদকৃত ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর আটক করে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে ইউএনও এর নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সায়েদ ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথরগুলো জব্দ করেন। তিনি পাথর গুলো স্থানীয় ইউপি মেম্বার আপ্রুসিং মার্মার জিম্মায় দেন। পরবর্তীতে উক্ত পাথরের বিষয়ে লামা উপজেলা প্রশাসন বান্দরবান জেলা প্রশাসনের কাছে মতামত চাইলে জেলা প্রশাসক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লামা থানা উক্ত মালিক বিহীন পাথর গুলো নিলামের অনুমতি চেয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। আদালত এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। এরই মধ্যে গত ৫দিনে উক্ত পাথর গুলো উধাও হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ও সুশীল সমাজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের পরোক্ষ সহায়তায় এই পাথর গুলো উধাও হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলেন, আদালতের মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত পাথর সমূহ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনে দুপুরে নিয়ে গেছে পাথর ব্যবসায়ীরা। পাথর ব্যবসায়ীরা কতটা বেপরোয়া হলে আদালতের জিম্মায় থাকা পাথর নিয়ে যাওয়ার সাহস করে ?
এই বিষয়ে পাথরের জিম্মাদার মেম্বার আপ্রুসিং মার্মা বলেন, উক্ত পাথর গুলো চকরিয়ার পাথর ব্যবসায়ী হুমায়ন মেম্বার, জামাল উদ্দিন ফকির ও মহিউদ্দিন মহিম দিনে দুপুরে নিয়ে গেছে।তাদের সংঘবদ্ধ গ্রুপ রয়েছে। জীবনের মায়ায় আমি প্রতিবাদ করেনি। তবে লামা থানাকে জানিয়েছিলাম।জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পাথর গুলো দেখার দায়িত্ব ছিল লামা থানা পুলিশের। প্রশ্ন উঠেছে আদালতের জিম্মায় থাকা পাথর কিভাবে নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা।এই বিষয়ে দায়িত্বে থাকা লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক খাইরুল হাসান বলেন, আমি কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম। তখন পাথর গুলো ছিল। কখন নিয়ে গেছে আমি জানিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, পরবর্তীতে পাথর গুলো পুলিশের জিম্মায় দেয়া হয়েছিল। জব্দকৃত পাথর উধাও ! বিষয়টা যথেষ্ট উদ্বেগের। যেহেতু এই বিষয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা চলমান, তাই আমি কোন মন্তব্য করবনা।জড়িতদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।প্রসঙ্গত,গত ৩ মে ২০১৮ইং জনৈক আলী হোসেন মিজান, প্রদীপ কান্তি দাশ ও মো. নাছির উদ্দিন এর নামে এক মাসের মেয়াদে ৪০ হাজার ২শত ঘনফুটের ৩টি পাথরের পারমিট প্রদান করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, এই তিনটি পারমিট দিয়ে সমগ্র লামা উপজেলা হতে প্রতিদিন ৩/৪ শত ট্রাকে করে লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনজনের কাগজ দেখিয়ে কয়েক শত পাথর ব্যবসায়ী সমগ্র উপজেলার বিভিন্ন স্থান হতে দেদারছে পাথর নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন কিছুই বলছে না। প্রতিদিন যে হারে পাথর যাচ্ছে তাতে করে এক মাসে কমপক্ষে ৮/১০ লক্ষ ঘনফুট পাথর পাচার হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!