বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন,বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কৃষকের ভ‚মিকা অপরিসীম।মাঠে-ঘাটে এক ইঞ্চি জায়গাও খালি থাকবেনা।প্রত্যেকের বসতবাড়ির পাশের সকল পতিত জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে।নিজেরা নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন করলে আমাদের আমদানী নির্ভরতা কমে যাবে।দেশটা আমাদের, আমাদের দেশটা কেউ এসে ভালো করে দিয়ে যাবেনা।আমাদের দেশকে আমাদের সুন্দর করতে হবে।প্রতিদিন আমাদের ব্যবহৃত সকল আবর্জনা হতে পলিথিন আলাদা করে নষ্ট করবেন এবং বাড়ির পাশে গর্ত করে অন্যান্য আবর্জনা জমিয়ে রেখে জৈব সার তৈরি করতে পারেন।দেশে আজ রাসায়নিক সারের কোন সংকট নেই।ফসলের যে কোন সমস্যায় কৃষি কর্মকর্তার সহায়তা নিবেন।
কৃষির অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে খাদ্যের পুষ্টিমান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।আরেকটি হচ্ছে কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিক করা।সস্তায় সুষম খাবার খেতে চাইলে তামাক চাষ পরিহার করে ধান, তেল,ডাল আর সবজির আবাদ বাড়াতে হবে। আগামীর বিশ্ব মন্দা ও খাদ্য সংকট নিরসনে চ্যালেঞ্জ হিসাবে মোকাবিলা করতে তামাক কমিয়ে ধান ও শস্যের চাষাবাদ বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।বর্তমানে তামাকের বিকল্প হিসাবে অনেকে সরিষা,সূর্যমুখি, আখ,ভুট্টা, সবজির চাষ করছে।
তিনি আরো বলেন,কৃষককে উৎসাহ দিতে সরকার নিয়মিত বিভিন্ন ফসলের বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।সরকার প্রদত্ত বীজ ব্যবহার করে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার যে অভিযোগ আজ সমাবেশে কৃষকরা করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। ভেজাল কৃষি বীজ প্রদান করলে বিআরডিবি সহ সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।সকলের সহযোগিতায় এবং সরকার কর্তৃক আরোপিত নিয়মনীতি মানার কারণে আজ ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ পৃথিবীতে প্রথম।হারিয়ে যাওয়া ইলিশ আজ আবার বাজারে সয়লাভ করেছে।কৃষকের যে কোন সমস্যায় ও সহায়তায় সরকার সবসময় কৃষকের পাশে ছিল,আছে এবং থাকবে।সমতল আবাদি জমির পাশাপাশি পাহাড়ি জমিতেও কৃষি আবাদ বাড়াতে হবে।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে বান্দরবানের লামায় আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এবং উপজেলা পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশ এইসব কথা বলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক।লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের কৃষকদের নিয়ে বিশাল এক কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।জেলা প্রশাসক লামা উপজেলায় পৌঁছালে লামার জনপ্রতিনিধি,সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা,গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক লামা, তামাক কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মোস্তফা জাবেদ কায়সার এর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান এর জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য শেখ মাহাবুবুর রহমান,ফাতেমা পারুল,বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.রফিকুল ইসলাম,লামা পৌরসভার মেয়র মো.জহিরুল ইসলাম,লামা ৩২ আনসার ব্যাটালিয়ন এর অধিনায়ক এএসএম আজিম উদ্দিন,অফিসার ইনচার্জ (লামা) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী,গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা সহ প্রমূখ।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক লামা উপজেলার পর্যটন খাতের নতুন সংযোজন লামা-চকরিয়া সড়কের ভিউপয়েন্ট “কিছুক্ষণ” এবং লামা অফিসার্স ক্লাবের রেস্ট হাউজ “শৈল বিলাস” এর শুভ উদ্বোধন করেন।কৃষক সমাবেশ শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মায়েদের মাঝে শিশু খাদ্য প্রদান করেন এবং সুলভমূল্যে সাধারণ মানুষের মাঝে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।