সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-পাহাড়ের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ নিয়ে বান্দরবান এখন উৎসবমুখর।পাড়ায় পাড়ায় চলছে পানি খেলা,পিঠা তৈরি আর নতুন বছরে পূজা অচর্নার আয়োজন।নানা বর্ণিল আর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে চলছে বর্ষবরণের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।আদিবাসীদের বর্ষবরণ আর বাঙালির চিরায়ত বাংলা নববর্ষ দুটিই একই সময়ে হওয়ায় বান্দরবানে বর্ষবরণ উৎসব হয়ে উঠে বর্ণিল ও আনন্দময়। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ বিজু।অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে মার্মা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই।পরের দিন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ বৈসু।¤্রােরাও উৎসবমুখর পরিবেশে বর্ষবরণ চাংক্রান পালন করবে।বাঙালির চিরায়ত বর্ষবরণ আর সেই সাথে ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের উৎসব সব মিলিয়ে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলন মেলায় পরিণত হয়ে উঠবে বান্দরবান।বর্ষবরণ উৎসব দেখতে প্রতিবারের মত এবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক বান্দরবানে ভিড় জমাবেন আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।ইতিমধ্যে হোটেল মোটেল রিসোর্টগুলো আগে ভাগেই বুকিং হয়ে গেছে।
মারমাদের সাংগ্রাইয়ে পানি খেলা: মারমাদের বর্ষবরণ সংগ্রাই। বাংলা নববর্ষের এক দিন আগে থেকে শুরু হয় এই উৎসব। বর্ষবরণের শুরুতে চন্দনের পানিতে বৌদ্ধমূর্তি ¯œান, বয়স্কপূজা, বৌদ্ধপূজা, পাড়ায় পাড়ায় পিঠা পুলি তৈরিসহ থাকে নানা আয়োজন। তবে সবচেয়ে মজার আকর্ষণ হলো যুবক-যুবতীদের দল বেঁধে পানি খেলা বা জল কেলি।নতুন বছরকে বরণ করে নিতে তারা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়।স্বচ্ছ পানির ধারা ধুয়ে মুছে দেয় পুরনো বছরের সব দুঃখ গ্লানি।শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও এই পানি খেলায় অংশ নেয়। বান্দরবান শহরের রাজার মাঠে পানি খেলা উৎসবের আয়োজন করা হয়। একদিকে চলে দল বেঁধে পানি খেলা প্রতিযোগিতা আর অন্যদিকে বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নেচে গেয়ে সবাই একসাথে বর্ষবরণ সাংগ্রাই পালন করে। শুধু মারমা সম্প্রদায়ই নয় এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙালিরাও যোগ দিচ্ছে উৎসবে।এবারের উৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি হ্লাগ্যচিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং মারমা জানান,এবার ৪ দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।অন্যবারের চাইতে এবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে উৎসব পালন করা হবে। উৎসবে বৌদ্ধমূর্তি ¯œান,ম্যারাথন,পানি খেলা,পিঠা তৈরি,তৈলাক্ত বাঁশে আরোহন,দড়ি টানা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন থাকছে।উৎসব পালনে নেতৃবৃন্দ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
চাকমা তঞ্চঙ্গ্যাদের বিজু : বর্ষবরণ বিজুকে ঘিরে উৎসবমুখর চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের পল্লিগুলো। বুধবার ফুল বিজু পরের দিন পর মূল বিজু সর্বশেষ গজ্জাগজ্জি। সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে বর্ষবরণ শুরু করবে চাকমা তঞ্চঙ্গ্যারা। এছাড়া রয়েছে বয়স্ক পূজা। এবারও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বর্ষবরণ উপলক্ষে শহরের বালাঘাটা এলাকায় ঘিলা খেলা উৎসবের আয়োজন করেছে।
¤্রােদের চাংক্রান: ¤্রাে সম্প্রদায় নানা আয়োজনে বর্ষবরণ চাংক্রান পালন করে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউট ¤্রােদের চাংক্রান উপলক্ষে চিম্বুকের ¤্রাে পাড়ায় উৎসবের আয়োজন করে আসছে। উৎসবে লাঠি খেলা, ¤্রাে বাঁশি প্রতিযোগিতা, মালা তৈরি প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন থাকে। বিভিন্ন এলাকার ¤্রাে নারী পুরুষ উৎসবে যোগ দেয়। আনন্দমুখর হয়ে উঠে ¤্রাে পল্লীগুলো।ত্রিপুরা সম্প্রদায়ও নানা আয়োজনে বর্ষবরণ বৈসু পালন করে থাকে। বান্দরবানের কালাঘাটায় এবার বর্ষবরণে উৎসবের আয়োজন করেছে।
লিখেছেনঃ-মিনারুল হক,সিনিয়র সাংবাদিক বান্দরবান।