পুনরায় আদালত অবমাননা তারেকের, রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড়


প্রকাশের সময় :২০ নভেম্বর, ২০১৮ ৩:৪২ : অপরাহ্ণ 560 Views
নিউজ ডেস্ক: গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে এসেছে- দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির নেতা তারেক রহমান। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি ১৮ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে সমালোচনার ঝড় বইছে রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক সচেতন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, এর মাধ্যমে বিএনপি তথা তারেক রহমান নির্বাচনী আচরণবিধি ও আদালত অবমাননা করেছে। যা আইনত দণ্ডনীয়।তারেক রহমান ও বিএনপির এমন কর্মকাণ্ড আইনপরিপন্থী এবং সরাসরি আদালত অবমাননার শামিল বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা। এদিকে নির্বাচন কমিশন পলাতক আসামির নির্বাচনী কার্যক্রমে সরাসরি হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। অন্যদিকে নির্বাচনের পূর্বে পলাতক একজন আসামির সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে একাধিক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে পলাতক আসামির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি হস্তক্ষেপের বিষয়টিকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ এবং প্রচলিত আইন বিরোধী বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দণ্ডপ্রাপ্ত ও আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ একজন ব্যক্তির নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিষয়টির বিরুদ্ধে ইসির কাছে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা ইসিতে উপস্থিত হয়ে তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র ও আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে ইসিকে অবহিত করেন।

তারেকের ধৃষ্টতা বিষয়ে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘স্কাইপের মাধ্যমে কথা বলে তারেক রহমান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে। দেশবাসীর মতো আমরাও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। এটি সুস্পষ্ট নির্বাচনী আইন ও আদালতের নির্দেশনার লঙ্ঘন। এ বিষয়ে আমরা কমিশনকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছি এবং দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছি। এছাড়া শনিবার (১৭ নভেম্বর) ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আদালত প্রাঙ্গণে নির্বাচন নিয়ে এমন সব কথা বলেছেন যা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এমনকি এটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করারও একটি প্রয়াস। এটি অব্যাহত থাকলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ইসি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে।’

বিষয়টিকে সরাসরি আদালত অবমাননা, রাষ্ট্রীয় আইন লঙ্ঘন এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল মন্তব্য করে বাম রাজনৈতিক সংগঠন সিপিবি’র সভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, একজন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, এর চেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রহসন কী হতে পারে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা আছে- তারেক রহমানের মতো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির বক্তব্য কোন প্রচারমাধ্যমে প্রচার করা যাবে না। সুতরাং তারেকের এই কাজ সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের লঙ্ঘন এবং আদালত অবমাননা করেছেন। বিএনপিও একই অপরাধের সমান ভাগীদার। একজন পলাতক ও ফেরারি আসামির সঙ্গে ওয়াদাবদ্ধ হয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এটি রাজনীতির জন্য কলঙ্কিত অধ্যায়। চোরের কাছ থেকে চুরিই শিখতে পারবেন আপনি। চোর ও দুর্নীতিবাজ কোনদিন সমাজ ও দেশের উন্নয়ন করতে পারে না। এদের জন্ম হয় জনগণের সম্পদ লুটপাট করে ভুরিভোজ করার জন্য। বিএনপি একটি লজ্জা-শরমহীন দলে পরিণত হলো আজ। যে দল রাষ্ট্রের আইনকে সম্মান করে না সেই দল কিভাবে রাষ্ট্রের উন্নয়ন করবে? বিএনপি ও তারেক রহমান দেশ ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এবারই প্রথম নয়, তিনি আগেও এমনটি করেছেন। তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামির ভিডিও কনফারেন্সের ব্যাপারে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা করে বিএনপি ও তারেক রহমানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!