সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-ছোট্ট রাইফার অকাল প্রয়াণ , আর একটি ট্র্যাজেডি। কাঁদিয়ে দিলো আমাদের মতো অধমদের বিবেককে, কিন্তু কাঁদাতে পারেনি মানবতাকে। তাইতো খুনীরা বার বার পার পেয়ে যায়!
চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার বলি হয়ে গত ২৯ শে জুন, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আড়াই বছর বয়সী ফুটফুটে কন্যা শিশু রাইফা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পর তাদের ছাড়িয়ে নিতে আসেন বিএমএর'র সেক্রেটারি, যে নিজেকে ডাক্তারের চেয়ে নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি। কত বড় সাহস, বিএমএ'র সেক্রেটারি ও তার সাঙ্গপাঙ্গ নেতাদের!! তারা কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার এবং সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ করেন এবং চট্টগ্রামের সব চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
কতিপয় ডাক্তার নামধারী ভন্ডরা তাদের অপকর্ম ঢাকতে কথায় কথায় একযোগে চিকিৎসা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে থাকেন কিন্তু সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ স্বরূপও একযোগে প্রকাশনা বন্ধ কিংবা কাজ না করার ঘোষণা দিতে পারেন না। বড় হাসপাতালের কর্পোরেট বিজ্ঞাপন বন্ধ হবে এমন শঙ্কায় অনেকে নির্ভেজাল সত্য সংবাদটিও পরিবেশনের সাহস করেননা, কারণ তাতে যদি নিয়মিত বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যায়।
শুধু ডাক্তারদের ক্ষেত্রে নয়, বড় কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই একযোগে কোন সংবাদ পরিবেশনের নজির তেমন একটা আমাদের দেশে চোখে পড়েনা। কেননা এখন বড় সব কর্পোরেট হাউজেরই একাধিক টেলিভিশন, প্রিন্ট পত্রিকা এবং অনলাইন প্রকাশনা রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লেখার দুঃসাহস দেখাতে যাবে কোন দুঃখে ?
সাংবাদিকরা তাদের কোন বিপদেই এক হতে পারছেন না কারণ মিডিয়া এখন কর্পোরেট দাসত্বে বন্দী। ছোটখাট মিডিয়াগুলো কিছু লেখার চেষ্টা করলেও সেগুলোকে আন্ডারগ্রাউন্ড বলে উড়িয়ে দেয়া হয়। তো, মূলধারার দাবীদার’দের কাছে একটাই প্রশ্ন, “কর্পোরেট হাউজের প্রকাশনায় কাজ করে আর কি-ইবা তুলে ধরবেন জাতির সন্মুখে”? তাই, এভাবেই একের পর এক নিজে, পরিবার, সহকর্মী, আত্নীয়স্বজনসহ যে কারো বিপদ নিরবে সহ্য করে নিন।
দেশের প্রখ্যাত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা 'দৈনিক সমকাল' পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরোর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক রুবেল খানের ফুটফুটে একমাত্র কন্যা শিশুটির অকালে ঝরে যাওয়াটা যদি সাংবাদিক সমাজ সহজভাবে নেয় এবং এর সঠিক তদন্ত-বিচার যদি সঠিকভাবে করা না হয় এবং এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির জন্য একযোগ না হয় তবে আমরা সাধারণ মানুষরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো! কেউ কি তা ভেবে দেখেছেন?
কলম সৈনিকেরা একত্রিত হও। কলমই হোক সবচেয়ে বড় ও একমাত্র হাতিয়ার এসব অন্যায়, অনাচার ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে। শিশু রাইফাতো আমাদেরই সন্তান। রাইফার স্হলে আমার, আপনার বা যে কারও আদরের ধন, কলিজার টুকরা সোনামনি থাকতে পারতো!
হে আল্লাহ, আর ভাবতে পারছিনা। ঈশ্বরের পর আমরা ডাক্তারের দিকেই তো তাকিয়ে থাকি। একটু সুন্দর ব্যবহার, একটু আস্হা বা একটু ভরসার স্হল তো তারাই। তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য মানুষ কোথায় যাবে? ভরসা করেই তো নামধারী এ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ছুটে গিয়েছিলেন একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে সাংবাদিক রুবেল ও তার স্ত্রী। টাকা-পয়সা খরচ করে কু-চিকিৎসার জন্যতো ছুটে যায়নি। কি অপরাধ ছিল তাঁদের? সুচিকিৎসা তো পায়ইনি, পেয়েছে কুচিকিৎসা, দুর্ব্যবহার, হতে হয়েছে লাঞ্ছিত এবং গ্রহণ করতে হয়েছে একমাত্র আদরের ধনের নিস্তেজ, নিথর লাশ....!!!!!!
এদেশের বড় বড় হাসপাতাল গুলোতে সামান্য গলা ব্যথা ও ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা যদি হয় মৃত্যু, তবে কেন মানুষ পয়সা খরচ করে বিদেশে যাবে না!! সামান্য একটু অসুস্থতা, জ্বর বা যেকোন চিকিৎসায় রোগীকে এমনভাবে ভরকে দিবে যে রোগী যেন মৃত্যু পথযাত্রী। ১০০-৫০০/- টাকার অষুধের প্রেসক্রিপশনের জন্য টেস্ট দিবে ২০/২৫ হাজার টাকার যা একজন মানুষের একমাসের বেতনও তো হতে পারে! তাহলে মানুষ কি করবে, কোথায় যাবে বা কোথায় দৌঁড়াবে!!!
একযোগে ঢালাওভাবে সবাই নয় তবে ধান্দাবাজ সব পেশায় আছে। ডাক্তার, পুলিশ, শিক্ষক, সাংবাদিক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, আমলা, কম-বেশী সবাই ধান্দাবাজ। এসব কিছু ধান্দাবাজ এর কারণে পুরো দেশ ও জাতি আজ উন্নতির পথে প্রধান অন্তরায়।
সৎ সাহসের প্রয়োজন এখনই। এসব অপকর্মকারী কিছু ডাক্তাররা হলো বর্তমান যুগের টাকার মেশিন। তাই তাদের বিরুদ্ধে লিখতে গেলেই অনেকের কলমের কালি শুকিয়ে যায়। দেশের সব টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন পোর্টাল গুলোতে এসব নেতা ও হসপিটাল গুলোর বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে রিপোর্ট করা উচিত।
"শক্তের ভক্ত নরমের যম" একথাটি ভুলে গেলে চলবে না। ঘাতকদের আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
জেগে ওঠো মানুষ....! জাগিয়ে তুলো মানবতাকে!!!
আমরা ছোট্ট সোনামনি রাইফার ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। যেন আর কোন রাইফা বাবা-মায়ের বুক খালি করে অকালে ঝরে না যায়।
__________________________________
লেখক: মাহবুবা সুলতানা শিউলি
সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ইমেইল : mahbubasheuly82@gmail.com
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2025 Chttimes.com. All rights reserved.