করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই পর্যন্ত দেশে দুই লাখ অতিক্রম করল। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত ভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাথে পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর সংখা বেড়েই চলেছে। কোনভাবেই এর সংক্রমণ কমানো যাচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের ১৩২ তম দিনে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৫৭ জন শনাক্ত হয়েছে। আর আজ সেটি দুই লাখ ছাড়িয়েছ। গত ২৪ ঘন্টায় আরো ২ হাজার ৭০৯ জন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ২০৬৬ জন। আক্রান্ত দের মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ ইতিমধ্যে মারা গেছেন। আর এই করোনায় গত শুক্রবার দেশে একদিনেই ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ২ হাজার ৫৮১ জন। আর এই পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৯৮জন।
বাংলাদেশে গত ৮ ই মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। আর তার দশ দিন পরে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। আমাদের দেশে সংক্রমণ শুরুর প্রথম দিকে আক্রান্ত এর সংখ্যা কম হলেও বর্তমানে এটি ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশজুড়ে। আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, ২১৫ দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী বেড়েছে, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নাম্বারে। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে ১৭ তম স্থানে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ২৭ তম স্থানে।
এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতি দিনই আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের মতো। জুলাই এর প্রথম দিক থেকেই করোনায় নানাবিধ কারণে পরীক্ষার সংখ্যা কমলেও শনাক্তের সংখ্যা কিন্ত কমে নি। প্রতি দিনই গড়ে মোট পরীক্ষার ২২ থেকে ২৪ শতাংশই নমুনা পজেটিভ বা করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছে। সামনে আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদে যদি গণ পরিবহন চালু থাকে তবে ধারণা করা হচ্ছে,ঈদের পরে সংক্রমণের হার আরও বাড়তে পারে। আমরা ঈদুল ফিতরের পরে দেখেছি যে, করোনায় সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর হারও বেশি ছিল। ঈদের সময় মানুষের যাতায়াত এবং লোকসমাগম গ্রামগঞ্জে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই করোনা ভাইরাস কে সঙ্গে নিয়েই এখন বাচঁতে হবে। অতএব নিজের নিরাপত্তা নিজের কাছে। পরিবারের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিজেকেই নিশিত করতে হবে। জনসমাগম এবং জন বহুল এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। গন পরিবহন এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। নিজের এবং পরিবারের কথা চিন্তা করে এই করোনা থেকে রক্ষা পেতে সচেতনার কোন বিকল্প নেই। আর সবাই ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলার অভ্যাস করতে হবে।
লেখকঃ কলামিস্ট,সাংস্কৃতিক কর্মী এবং পুলিশ কর্মকর্তা।
সাবেক সাধারণ সম্পাদকঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।