মুক্তমত ডেস্কঃ-ভোটের গন্ধে ভরপুর এখন প্রবাস।বাঙালিরা গোলকের যে প্রান্তগুলোতে ছড়িয়ে আছে,সকল প্রান্তে উঁকি দেওয়া হয়নি আমার।কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক,দুইটি শহরে পা রাখতে পেরেছি। দিন কয়েক সেখানকার প্রবাসী বাঙালিদের কথা শুনেছি, তাদের দেখেছি।কথা শোনার চেয়ে দেখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।কারণ সময়ে সময়ে মানুষের আচরণে পরিবর্তন আসে।ভাবনায় যে বদল ঘটে যায় সেটি দৃশ্যমান হয় আচরণে।অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসীদের মন ও দেহভঙ্গী গুরুত্বপূর্ণ।যুক্তরাষ্ট্র বলেই তাদের বিশেষত্ব আছে এটা যেমন বলা যায়।আবার ওই দেশে যারা বসবাস করেন,তাদের বসবাসের কারণ ও অনিবার্যতাও গুরুত্বপূর্ণ।আমরা দেখতে পাই শুধুমাত্র রুটি রুজির জন্য,আরেকটু ভালো থাকা বা সুখ-স্বপ্নে বিভোর হয়ে কিছু মানুষ মার্কিন দেশে পাড়ি দিয়েছেন।তারা সেখানকার জল হাওয়াতে মানিয়ে নিয়েছেন বা নেওয়ার চেষ্টার দৌড়ে আছেন।তাদের ছোট একটি অংশ আমেরিকা এবং বাংলাদেশের রাজনীতির খবরাখবর রাখেন।বাকিরা নিজেদের রুটি-রুজির গণ্ডির বাইরে যেতে চান না।আরেকটি অংশ আমেরিকার নানা অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে আছেন,তারা সেখানকার মৌসুমী প্রবাসী।বাংলাদেশের রাজনীতির পটপরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে তাদের অবস্থান।তাদের কাছে আমেরিকার হালকা সবুজ,গাঢ় সবুজ কাগজ থাকলেও তারা মুখিয়ে থাকেন বাংলাদেশে আসার জন্য।যদিও সেটাও আবার এক মৌসুমের জন্য। অর্থাৎ বাংলাদেশের ক্ষমতা বলয়ের সঙ্গে লেপ্টে যাওয়ার লিপ্সা।এই প্রবাসীরা বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।এদের কেউ নিজের ভাগ্য বদলের জন্য আমেরিকা গেছেন।আবার কেউ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে থাকা নিরাপদ নয় ভেবে উড়াল দিয়েছিলেন।প্রবাসের রাজনীতি এই দুইপক্ষের ওপরই নিয়ন্ত্রিত।প্রবাসের মধ্যে নিউইয়র্ক এবং লন্ডনের রাজনৈতিক তৎপরতা বেশি।এই দুই শহরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের যাতায়াত বরাবরই বেশি সেটি যেমন অন্যতম প্রধান কারণ।তাছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ওই দুই দেশের অবস্থান বা পর্যবেক্ষণও গুরুত্ব পেয়ে থাকে।এই অংকের সমীকরণে লন্ডন এবং নিউইয়র্কে সফরে গেলে মনে হতে পারে বাংলাদেশের ক্ষমতার নাটাই বুঝি তাদেরই দখলে।বরাবরের মতো এবারও নিউইয়র্ক সফরে সেই সুতো টানাটানিই লক্ষ্য করা গেলো।নিউইয়র্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ রাজ্যের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠরা ভোট নিয়ে ভাবছেন এখন।আওয়ামী লীগের রাজনীতি যারা করছেন,তারা আগামী ভোটের নানা রকম নকশার কথা বলছেন।নির্বাচন হলে,কী নকশায় হবে তা নিয়ে নানা রকম ফর্মুলা তারা দিচ্ছেন।এমন ভাবে বলছেন,যেন শীর্ষ নেতারা মুখিয়ে আছেন তাদের পরামর্শের জন্য।কাকে কোন আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে সেটাও বুঝি চূড়ান্ত। এদের দুই-একজন ভাবছেন আওয়ামী লীগ এবারও ক্ষমতায় এলে তারা এবার দেশে এসে সরকারকে সাহায্য করবেন।তাদের আগে যারা এসেছেন,তারা অতোটা কাজে আসেনি সরকারের।বিএনপিকে একটু দ্বিধায় দেখা গেলো। বিশেষ করে নিউইয়র্কের বিএনপি সমর্থকেরা বুঝে উঠতে পারছেন না,তারা কোন শক্তির কাছে নতজানু থাকবেন। লন্ডন এবং ঢাকায় তাদের শক্তি বিভক্ত।কেউ ঢাকায় ঢাকায় দৌড়াচ্ছেন,কেউ দৌড়াচ্ছেন লন্ডন।তবে বিএনপি সমর্থকদের অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন,বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারা দেশে ফিরে সরকারের সঙ্গে যুক্ত হবেন।ভোট নিয়ে তাদের কাছেও আছে নানা ফর্মুলা।কোনও ফর্মুলা ঢাকা প্রভাবিত,কোনোটি লন্ডনের।প্রবাসের আওয়ামী লীগ,বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে একপ্রকার সমঝোতাও দেখা গেলো।বিষয়টি এমন যে–এতোদিন প্রবাসের আওয়ামী লীগেরা দেশে ক্ষমতার সঙ্গে থেকে ক্ষমতা উপভোগ করেছেন,বাড়তি ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন।এখন তারা ফিরে যাবেন-তাদের জায়গা নেবেন বিএনপির সমর্থকেরা।ভোট নিয়েতো নিশ্চয়তা এবং অনিশ্চয়তার এতো গল্প শোনা হলো।তাতে একটি বিভ্রান্তির মধ্যেই আছি দেশের রাজনীতি নিয়ে।তবে সত্যিই বুঝে উঠতে পারে না,দেশে থেকে যারা লড়াই সংগ্রাম করেন।দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন,তারা কেন প্রবাসের চায়ের আড্ডার রাজনীতিকে এতোটা পাত্তা দেন।এই পাত্তা দেওয়াটা প্রবাসের বাংলাদেশিদের খণ্ড-বিখণ্ড করছে দিনের পর দিন।ফলে প্রবাসে অন্য দেশের মানুষগুলো চাকরি ও বাণিজ্য যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা সেভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না।তারা নিজেরাই নিউজেদের মাঝে বিভক্তির আইল তুলে রাখছে।জানি না প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের রাজনীতিতে ‘প্রোটিন’ এর জোগান দেয় কিনা।লেখকঃ-তুষার আবদুল্লাহ;বার্তা প্রধান,সময় টিভি।উৎসঃ-(((বাংলাট্রিবিউন)))
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2025 Chttimes.com. All rights reserved.