চাঁদা চেয়ে থানায় চিঠি পাঠানোয় কথিত এক সাংবাদিককে আটক করেছে পুলিশ।চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় পাঠানো ওই চিঠির সঙ্গে ৫ লাখ টাকার খরচের একটি হিসাবও সংযুক্ত করা হয়। এর আগে একই চিঠি পাঠানো হয় নগরীর কোতোয়ালী থানায়ও।বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে কথিত সাংবাদিককে আটক করা হয়।আটক এম এ মুহিবুল্লাহ হোসাইন চৌধুরী নিজেকে ‘বিবিসিনিউজ ২৪’ নামে একটি অনলাইন পত্রিকার চিফ রিপোর্টার উল্লেখ করে থানায় চিঠি দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্যাডে লেখা চিঠিতে নগরীর পাহাড়তলী থানার অলঙ্কার মোড়ে হানিমুন টাওয়ারে এর কার্যালয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।চিঠিতে আগামী ১১ ও ১২ অক্টোবর কক্সবাজারে অনলাইন পত্রিকাটির চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে জানিয়ে এ উপলক্ষে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়।চিঠির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে পাঠানো খরচের বিবরণীতে বলা হয়েছে,অনুষ্ঠানে সর্বমোট লোক হবে ২১৫ জন।৫০টি হোটেল কক্ষের ভাড়া ১ লাখ টাকা, ১৫টি মেহমানদের ভিআইপি কক্ষের ভাড়া ৩০ হাজার টাকা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য কনফারেন্স রুমের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা,৪টি বাসে আসা-যাওয়া বাবদ ৭২ হাজার টাকা,২১৫টি টি-শার্টের দাম ৩২ হাজার ২৫০ টাকা,১৫টি ক্রেস্টের দাম বাবদ ১৫ হাজার টাকা,৭ জনকে পুরস্কার বাবদ ১৫ হাজার টাকা,৪ বেলা নাস্তা বাবদ ৫৪ হাজার ৮২৫ টাকা,তিনবেলা খাবার বাবদ ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫০ টাকা।সবমিলিয়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪২৫ টাকা খরচের হিসাব তুলে ধরা হয়েছে।খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জন্য টাকা চেয়ে থানায় চিঠি পাঠানোর ঘটনা আগে কখনো শুনিনি। এগুলো স্রেফ চাঁদাবাজি।উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা মুহিবুল্লাহ নামে ব্যক্তিটিকে আটক করেছি।তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।’ এদিকে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘তিনদিন আগে চাঁদা চেয়ে পাঠানো একই চিঠি আমার থানায়ও এসেছে।সাংবাদিকতার মতো পরিচ্ছন্ন পেশার সাইনবোর্ড লাগিয়ে একটি চক্র এভাবে চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে।তার সাহস দেখে আমরা বিস্মিত।আমরাও মুহিবুল্লাহ নামে এই ব্যক্তিকে আটকের জন্য খুঁজছিলাম।’
উল্লেখ্য,এই মুহিবুল্লাহ হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে স্পর্শকাতর গোয়েন্দা সংস্থার নাম ব্যবহার এবং মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বান্দরবান এর স্থানীয় জনপ্রিয় অনলাইন গনমাধ্যম পাহাড় বার্তা.কম সংবাদ প্রচার করেছিলো।সেসময় মুহিবুল্লাহ নিজেকে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে একজন বৌদ্ধ ভান্তে কে ব্ল্যাকমেইল করার মতো অভিযোগ উঠার পর বান্দরবান সদর থানা পুলিশের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে কথিত এই সাংবাদিক বান্দরবান থেকে গা-ডাকা দিয়ে চট্টগ্রাম পাড়ি দেয়।চট্টগ্রাম গিয়েও বিসিসি টুয়েন্টিফোর নামক অনলাইন প্রতিষ্ঠান এর পরিচয় দিয়ে চট্টগ্রাম এর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খবর প্রকাশের হুমকি ধামকি দিয়ে পুনরায় চাঁদাবাজির মতো খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে।