বর্ণাঢ্য এক রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মংক্য চিং চৌধুরী (৬১) আর নেই।শনিবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় বান্দরবান জেলা শহরের নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।গত দুই দিন আগে শরীরিক অসুস্থতা নিয়ে তাকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ফুসফুসে পানি জমা,কিডনি জটিলতা,উচ্চ ডায়বেটিস সহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণে তাকে দীর্ঘ সময় লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয়।লাইফ সাপোর্টে থাকাকালে তাঁর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠে এবং পরে শনিবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।বর্ণাঢ্য এই রাজনৈতিক নেতার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পরলে বান্দরবানে জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।সৃষ্টি হয় বিদায়ের শোকাহত একটি পরিবেশ।স্যোশাল মিডিয়া (ফেসবুকে) আওয়ামীলীগ এর সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা প্রবীণ এই নেতার ছবি সম্বলিত বিভিন্ন লেখা দিয়ে আত্মার শান্তি কামনা এবং বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে তাকে শেষ বিদায় জানাতে দেখা যায়।মৃত্যুর খবর শোনার পরপরই বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের প্রবীণ এই নেতার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।পার্বত্য মন্ত্রীর পক্ষে প্রবীণ এই নেতার মরদেহে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন বীর বাহাদুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি খলিলুর রহমান সোহাগ।শোক জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা,পৌরসভার মেয়র মো.ইসলাম বেবী,প্যানেল মেয়র সৌরভ দাশ শেখর প্রমুখ।বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও শোক প্রকাশ করা হয়েছে।এদিকে মংক্য চিং চৌধুরীর মহাপ্রয়ানে গভীর শোক জানিয়েছেন,বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ।প্রসঙ্গত,বান্দরবানের রাজনীতিতে নানা কারনে মংক্য চিং চৌধুরী আলোচিত একটি নাম।বান্দরবানের বিএনপি রাজনীতিতে তিনি দীর্ঘ সময় নেতৃত্বে ছিলেন।বান্দরবান জেলা বিএনপির সহসভাপতি হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।ছিলেন বান্দরবান জেলা বিএনপির অত্যন্ত দাপুটে একজন নেতা।নিজেকে গভীরভাবে জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী একজন সিপাহী হিসেবে নানা সভা সমাবেশে অত্যন্ত গর্বের সাথে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন।বান্দরবান জেলা বিএনপির অন্তঃকোন্দল এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কে অসম্মান জানানোর মতো কারণে অনেকটা অভিমান করেই তিনি একসময় বিএনপি রাজনীতি কে বিদায় জানিয়েছিলেন বলে তিনি নানা সময়ে মন্তব্য করলেও বিএনপির নেতারা তা নাকচ করে দিয়েছেন।পরে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতি তে সম্পৃক্ত হন।উল্লেখ্য,মংক্য চিং চৌধুরী তৎকালীন স্থানীয় সরকার পরিষদের (বর্তমানে জেলা পরিষদ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি মৃত্যু বরণের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের একজন সম্মানিত ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।১৯৯৬ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের গৃহীত নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড তিনি দক্ষতার সাথে পালন করেন।সেসময় মাত্র ১৫ মাস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রাজনৈতিক এই নেতাকে বান্দরবানের তৎকালীন স্থানীয় সরকার পরিষদের সেবাপ্রার্থী জনসাধারণের বিরাট একটি অংশ "মিষ্টভাষী একজন জনপ্রতিনিধি" হিসেবেও তাকে আখ্যায়িত করেন।তাঁরও আগে সাচিং প্রু জেরী স্থানীয় সরকার পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জেরী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ একজন কাউন্সিলর হিসেবে তিনি দীর্ঘ ছয় বছর দায়িত্ব পালন করেন।পাশাপাশি একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে বান্দরবানের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.