আওয়ামী লীগ সরকারের গত ৯ বছরে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় উন্নয়ন কাজের আর্থিক বরাদ্দের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। চলমান রয়েছে অনেক জন গুরুত্বপূরর্ণ প্রকল্প। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময়েই বান্দরবান ৩০০ নং আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং অধিকাংশ উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তাবায়ন করেছেন।
এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময়ে তিন পার্বত্য জেলায় বাস্তবায়ন হয়েছে হাজার প্রকল্প।
এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬ষ্ঠ বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। সারা দেশে বেশি সংখ্যক নির্বাচিত ১০ জন সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জননন্দিত এই নেতা। তাই এবার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবেই বীর বাহাদুরকে দেখতে চাইছেন বান্দরবানবাসী।
এবার সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং বান্দরবান ৩০০ নং আসন থেকে ১৪৩৯৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী বোমাং রাজপুত্র সাচিং প্রু জেরী (প্রাপ্ত ভোট ৫৮৭১৯)। ৮৮ হাজার ভোটেরও বেশি ব্যবধানে জয়ী হন বীর বাহাদুর।
১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ২০১৪ ও সর্বশেষ ২০১৮ সাল মিলিয়ে ষষ্ঠ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এই নেতা। তাই এ অঞ্চলের মানুষের চাওয়া পাওয়া একটু বেশিই। পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য বীর বাহাদুরকে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবেই দেখতে চাইছেন পার্বত্য অঞ্চলের লোকজন।
এদিকে, শনিবার সন্ধায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। তারা বীর বাহাদুরকে পূর্ণ মন্ত্রী করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। বিশেষ এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, সহ সভ্পাতি শফিকুর রহমান, আবদুর রহিম চৌধুরী, একে এম জাহাঙ্গির, ক্যসাপ্রু মারমা, সাধারন সম্পাদক পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, যুগ্ম সম্পাদক লক্ষিপদ দাশ, জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুরসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ছিলেন।
বৈঠক শেষে একে এম জাহাঙ্গির জানান, প্রধানমন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগে নেতৃবৃন্দের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। বীর বাহাদুরকে ষষ্ঠ বারের মতো নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। আগামীতে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আওয়ামী লীগ যাতে কাজ করে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতাদের নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বীর বাহাদুরকে পূর্ণ মন্ত্রী করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবানের প্রতি তার দুর্বলতা রয়েছে। পিছিয়ে পড়া এলাকা হিসেবে তার সুনজরও রয়েছে এ অঞ্চলের দিকে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষিপদ দাশ জানান, সারা দেশে সর্বোচ্চ নির্বাচিত ১০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বীর বাহাদুর। এছাড়া তার সময়ে তিন পাহাড়ি জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, ক্লিন ইমেজ সর্বোপরি জনগণের প্রতি তার আন্তরিকতা বীর বাহাদুরকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। এসব বিষয় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়েও আলোচনা হচ্ছে। আমরা আশাবাদি এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বীর বাহাদুরকে পূর্ণ মন্ত্রী করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লক্ষিপদ দাশের মতো জেলা আওয়ামী লীগ ও এলাকার লোকজনদেরও একই দাবি।
স্থানীয়রা জানান, তার সময়ে বান্দরবানে আবাসিক স্কুল, হোষ্টেল, নার্সিং ট্রেনিং কলেজ, প্রাইমারি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, কারিগরী শিক্ষা, ভোকেশনান ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, রুমা, থানছি সাংঙ্গু ব্রিজ, আড়াইশ শয্যার হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, সেনাবাহিনীর সীমান্ত সড়কসহ হাজারো বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে।
মিনারুল হক (পরিবর্তন ডটকম)