নিউজ ডেস্কঃ-সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বান্দরবান ৩০০নং আসনে অবশেষে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর এই তালিকায় বান্দরবান আসন থেকে টানা ৫বারের নির্বাচিত এমপি বীর বাহাদুর এর নাম প্রকাশ করা হয়। আজ রোববার(২৫ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন প্রাপ্তদের চিঠি দিতে শুরু করে দলটি।প্রসঙ্গত, বান্দরবান পার্বত্য জেলা থেকে নৌকা প্রতিকে মনোনয়নের জন্য আও্রয়ামীলীগ থেকে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তংচঙ্গ্যা, বহিস্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবুর রহমানসহ মোট ৯জন দল থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ওই তফসিল অনুযায়ী, ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন নির্ধারিত হয়। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আবেদনের ভিত্তিতে ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পুনঃতফসিল অনুযায়ী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর এবং ভোট গ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
►►এক নজরে বীর বাহাদুর এর বর্ণাঢ্য জীবনঃ-
বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। পিতা লাল মোহন বাহাদুর, মাতা মা চ য়ই। তিনি ১৯৬০ সালের ১০ জানুয়ারি বান্দরবান জেলা সদরের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাইমারি শিক্ষা গ্রহণ শেষে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে এসএসসি পাশ করেন। এরপর শুরু হয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন। তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ভর্তি হন এবং পরে বান্দরবান সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এম.এ. পাশ করেন।বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংসদীয় দলের হুইপ নির্বাচিত হন। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের সময়ে তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগে সংগঠনকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির পূর্বে এ সংক্রান্ত সংলাপ কমিটির অন্যতম সদস্য এবং তৎকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে, ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রথম বারের মত এবং ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয় বারের মত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এর ফলে তিনি পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি তথা ভৌত অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায় সুযোগ পান।এছাড়া বীর বাহাদুর নবম জাতীয় সংসদের সংসদ কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ঐ সংসদের একজন প্যানেল স্পীকার ছিলেন যার ফলে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই তিনি খন্ডকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছাত্র জীবন থেকেই খেলাধূলা ও সংস্কৃতি চর্চায় গভীর মনোযোগী ছিলেন। তার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফুটবল রেফারী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দক্ষতার সাথে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৯৭ সালে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল কোয়ালিফাই রাউন্ডে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়া গমন করেন এবং বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া অষ্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অলিম্পিক ২০০০-এ বাংলাদেশ দলের চীফ অব দ্য মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্বরূপ ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ফ্রান্স গমন করেন।
বাংলাদেশ বিমানের লন্ডন-নিউইয়র্ক ফ্লাইট উদ্বোধনের জন্য এবং জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে আমেরিকা এবং ২০০৬ সালে চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে চীন গমন করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের জন্য জাপান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মায়ানমার ও কম্বোডিয়া সফর করেন। বৃক্ষরোপণে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি জাতীয়ভাবে পুরস্কার প্রাপ্ত একজন ব্যক্তিত্ব। একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবেও তার খ্যাতি সমাধিক। তিনি ২০১০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে মনোনীত হন এবং বর্তমানে এ পদে আসীন আছেন।বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম, ২০০১ সালে অষ্টম, ২০০৮ সালে নবম এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে ০৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান সংসদীয় আসন (৩০০ নং আসন) থেকে টানা পঞ্চম বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অধিকার বীর বাহাদুর ঊশৈসিং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৯১ সালে মে হ্লা প্র’র সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক। ছেলে উসিং হাই (রবিন) বার-এট-ল করছে, মেঝ ছেলে থোয়াইং শৈ ওয়াং (রোমিও) অস্ট্রেলিয়াতে এবং একমাত্র কন্যা ম্যা ম্যা খিং (ভেনাস) ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।তথ্য সুত্রঃ-(পাহাড় বার্তা)
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.