

বান্দরবানে শুরু হলো মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব।উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য জেলার পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা,বিভিন্ন পাড়া ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর বিভিন্ন আনন্দ আয়োজন। পুরাতন বাংলা বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরই পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত মারমা সম্প্রদায়ের জনসাধারণ উদযাপন করে সাংগ্রাই উৎসব।প্রতিবছরের ১৩এপ্রিল থেকে বিভিন্ন অনুষ্টানমালার আয়োজন করে কয়েকদিন ব্যাপী পার্বত্য জেলা বান্দরবানে চলে এই উৎসবের আমেজ।
এদিকে প্রতিবছরের মত মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান উৎসব উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি বান্দরবানের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণী ও শিশুরা বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। র্যালীতে অংশ নেয় মারমা,চাকমা,ম্রো,ত্রিপুরাসহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষসহ বাঙ্গালী জনসাধারণ।পুরাতন বাংলা বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ জানাতে এই আয়োজনে সামিল হতে পেরে খুশি সকলে।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।উদ্বোধন শেষে তিনি নতুন বছর সকলের জন্য মঙ্গল নিয়ে আসুক এমন প্রত্যাশা কামনা করেন।এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.আবু তালেব,র্পাবত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং মারমা,উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চ নু মং মারমাসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।
শোভাযাত্রা শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এর হলরুমে উৎসব উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় বয়োজ্যেষ্ঠদের পূজা অনুষ্ঠান।এসময় বিভিন্ন পাড়া ও গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই উৎসবের আয়োজনে সামিল হয় আর আয়োজকেরা বয়োজ্যেষ্ঠদের পূজা করার পাশাপাশি বিভিন্ন সামগ্রী দান করে।বয়োজ্যেষ্ঠদের পূজা করার মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করতে পেরে খুশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের তরুণ তরুণী।
আয়োজকরা জানায় নানা আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী চলবে মারমা সম্প্রদায়ের এই সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন।১৪ এপিল দুপুরে পবিত্র বুদ্ধ মূর্তি স্মান,রাতব্যাপী পিঠা তৈরি উৎসব,১৫ এপিল বিকেলে মৈত্রি পানি বর্ষন,ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও সবশেষে ১৮ এপিল সন্ধ্যায় বিহারে বিহারে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে সমাপ্ত হবে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই সাংগ্রাই উৎসব।