আবুল কালাম আজাদ, (সহঃ সম্পাদক),সিএইচটি টাইমস নিউজঃ-বান্দরবান জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাছির উদ্দিন কে ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।গত ২৭ এপ্রিল রাত দশটায় মীর নাছির নিজেই বান্দরবান জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ চেয়ারম্যান কে মোবাইলে কল করে কর্মী সভা বাতিল করেন।কিন্তু এই সিদ্ধান্ত জানানোর দেড় ঘন্টা পর রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ পুনরায় তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কর্মী সভায় অংশগ্রহন করার কথা জানান।এতে জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা যারা সাচিং প্রু জেরীর নেতৃত্বে গত ১৮ এপ্রিল মীর নাছিরের সাথে চট্রেশ্বরীর নিজ বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছিলেন তারা তো অবাক হয়েছেনই পাশাপাশি নতুন বিতর্কের সুত্রপাত ঘটলো।বিতর্কের শেষ এখানেই নয়,গত ১৮ এপ্রিল মীর নাছির নিজেই জেরী-ম্যা মা চিং দুজনের কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে জেলা থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এর সমন্বয়ে কর্মী সভা করার নির্দেশ দেন।কিন্তু দশ দিনের ভেতর মীর নাছির তুঘলকি কায়দায় সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে গিয়ে একটি বিতর্কিত গ্রুপ কে নিয়ে কর্মী সভা করায় শুধু জেরী সমর্থকরা নয় হতবাক হয়েছে বান্দরবান বিএনপির বিপুলসংখ্যক সমর্থক গোষ্ঠী।তাদের ভাষ্যমতে,এটা কোন ধরনের নীতি আদর্শ বাস্তবায়ন যেখানে স্পষ্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে প্রশাসন যন্ত্রের সরাসরি সহযোগিতা নিয়ে জেলা বিএনপির বিতর্কিত একটি চক্র কর্মী সভা আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে।শুধু তাই নয় রহস্যজনক এই কর্মী সভার ভেন্যু থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া নেতাদের ভোল্ট পাল্টানোর ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দৃশ্যমান হয়েছে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নিয়েও।যে ভেন্যু তে আদিবাসী দিবস পালনের জন্য বান্দরবান এর আদিবাসীরা আবেদন করেও আদিবাসী দিবস পালনের অনুমতি পায়নি সেই একই ভেন্যু তে বিএনপির বিতর্কিত অংশ এমন কোন জাদুর মায়াজালে কে.এস.আই কতৃপক্ষকে আবদ্ধ করে নিলো যে চাওয়া মাত্রই ভেন্যু টি পেয়ে গেলো। তোলপাড় চলছে পুলিশী নিরাপত্তায় বিএনপি নেতাদের জামাই আদরের প্রটোকল প্রাপ্তি নিয়েও।বিপুলসংখ্যক বিএনপি সমর্থক গোষ্ঠীর প্রশ্ন,যে ম্যা মা চিং বিএনপির মূল ভিত্তি দলের রাজনৈতিক কার্যালয় নির্মানের জন্য দলের টাকায় কেনা দলীয় জায়গাটি পর্যন্ত নিজের নামে লিখে নিয়ে অত্যাধুনিক শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করে ভাড়া আদায়ের মতো অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারে সেই ষড়যন্ত্রকারী ম্যা মা চিং এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মী সভায় মীর নাছির উদ্দিন উপস্থিত হলেন কিভাবে?তাহলে তিনি গত ১৮ এপ্রিল কেনইবা উপজেলা চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে কর্মী সভা আয়োজন এর সিদ্ধান্ত কিংবা নির্দেশনা দিয়েছিলেন?দলের এমন দুঃসময়ে বান্দরবান এর বিতর্কিত চক্রটির আয়োজনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সরকারী হলরুমের কর্মী সভায় তিনি উপস্থিত হয়ে দলীয় আদর্শের সাথে বেঈমানী করেছেন বলেও তারা মন্তব্য করেন।তাদের ভাষ্য,যখন দলের চেয়ারপারসন অন্ধকার কারাগার এর কারা প্রকোষ্ঠে অত্যন্ত নিম্নমানের একটি আবদ্ধ কক্ষে দিনাতিপাত করছেন ঠিক সেই সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলরুম কিংবা সরকারী সার্কিট হাউজে ভুরিভোজ খেয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া অত্যন্ত হাস্যকর,এটা দলের সাথে বেঈমানী করা ছাড়া ভিন্ন কিছু হতে পারেনা।বিপুল সংখ্যক বিএনপি সমর্থকদের ভাষ্য যে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি গত দশবছরের বেশি সময় সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে নামমাত্র দাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে না,যে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপির মতো জনপ্রিয় একটি দলের মহাসিবের বিরুদ্ধে একশোর বেশি মামলা বিচারাধীন ঠিক সেই সময় বান্দরবান জেলায় এমন কি হয়ে গেলো যে সরাসরি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং পুলিশী নিরাপত্তা নিয়ে মীর নাছির খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইতে পারছেন???কর্মীসভা’র অনুমতি বিষয়ে স্থানীয় বিএনপির সমর্থকরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন দুটো গ্রুপ’ই প্রশাসনের নিকট কর্মী সভা করার আবেদন জানালো কিন্তু এক পক্ষ অনুমতি পেলো অন্যপক্ষ অনুমতি পেলোনা তা সত্যিই বিরল।বান্দরবান’র রাজনৈতিক অঙ্গনে বান্দরবান জেলা বিএনপি’র কর্মীসভা আয়োজনের অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের এমন দৈত নীতি তীব্র মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।উল্লেখ্য,তথাকথিত মাম্যাচিং ও জাবেদ রেজার ২১ সদস্যের আংশিক কমিটির ১৬জন নেতা তাদের নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।পাশাপাশি বান্দরবান জেলাধীন ৭টি উপজেলা,২টি পৌরসভার ইউনিট সমুহ তথাকথিত কমিটি কে প্রথম থেকে অনাস্থা ও প্রত্যাখান করেছে।তাঁরই ধারাবাহিকতায় বান্দরবান জেলার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিমসমূহ যথাক্রমে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু,জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল) মানীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম,উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া বাস্তবতার নিরিখে বান্দরবান সফরসূচি স্থগিত করেছিলেন।