মোঃরফিকুল ইসলাম (লামা) বান্দরবানঃ-স্বাভাবিক প্রসব সেবা জোরদারকরণ ও ২৪/৭ (সার্বক্ষণিক) মাতৃসেবা নিশ্চিত করার বিষয়ক এক অবহিতকরণ কর্মশালা মঙ্গলবার (২২ মে) লামা টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর লামা কর্তৃক কর্মশালার আয়োজন করা হয়।পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিচালক ডা: অংচালু এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী।বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ- জান্নাত রুমি, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা জামাল, থোয়াইচাহ্লা মার্মা, আলীকদম উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিরিণা আক্তার, লামা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শরাবান তহুরা ও ইউএনডিপি প্রতিনিধি ধনঞ্জয় ত্রিপুরা সহ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ তুলে ধরেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমসিএইচ-সার্ভিসেস ইউনিটের উপ-পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানাজার (মাতৃস্বাস্থ্য) ডা: ফাহমিদা সুলতানা। এছাড়া কর্মশালায় লামা-আলীকদমের ১০/১২ জন মেডিকেল অফিসার ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে অনুকুল পরিবেশ থাকলে একজন গর্ভবতী মা কখনো প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হবেনা। এতে করে গর্ভবতী মাকে আর প্রসবকালীন সময়ে বিপদের মুখে পড়তে হবে না। পাশাপাশি বর্তমান সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছেন।
কর্মশালার বক্তাদের কথা গুলো ছিল নিতান্তই বাস্তব বিরোধী। কর্মশালায় লামা সরকারী হাসপাতালের একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বক্তব্য রাখলেন। যিনি প্রায় দেড় বছর যাবৎ লামা হাসপাতালে কর্মরত। যাকে লামার মানুষ আদৌ কখনো দেখেনি। আমরা মিডিয়া কর্মী হয়েও তাকে চিনিনা। মাস শেষ হলে যার বেতন বিকাশের মাধ্যমে চলে যায়। আর তারাই বললেন প্রাইভেট ক্লিনিকে যাবেন না, সরকারী হাসপাতালে আসেন আমরা দেব স্বাস্থ্য সেবা। যারা কিনা হাসপাতালেই আসেন না তারা দেবে স্বাস্থ্য সেবা। বিষয়টা হাস্যকর। লামা হাসপাতালে ৬ জন মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছে। যার মধ্যে দুই জনকে ছাড়া অন্যদের দেখাই যায়না।
পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলো অবস্থা ভাল করেই জানে লামার মানুষ। ঔষুদ আর ডাক্তার না থাকার অভিযোগ শুনতে শুনতে জনপ্রতিনিধি ও কর্তা ব্যক্তিরা অসহ্য। লামা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তেমনি কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরলাম।
১. লামার ৭টি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দের SACMO ও স্টাফদের কেন্দের বাসভবনের অবস্থানের নির্দেশ দিলেও তারা মানছেনা।
২. সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও দিনের কয়েকঘন্টা ছাড়া তাদের দেখা মিলেনা। অফিস খোলার দিন পাওয়া যায়না আবার বলে ২৪/৭ (সার্বক্ষণিক) সেবা !
৩. প্রতিটি কেন্দ্রে ঔষুদ পাওয়া যায়না বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ঔষুদ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
৪. কয়েকটি কেন্দ্রের সরকারী জায়গা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদাসীনতার কারণে বেদখলের অভিযোগ উঠেছে।
৫. অনেক কেন্দ্রে গর্ভবতী মাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষুদ দেয়া হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেছে।
৬. লামা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকি, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ভুয়া মাঠ ভিজিটের কথা বলে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে।