পাহাড়ের স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে তিন পার্বত্য জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পাহাড়ী পরিবারের মানুষরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বহুল পরিচিত মাচাং ঘর এর আদলে ঘর পাচ্ছে।বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি নিজ উদ্যোগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মাচাং ঘর নির্মাণ এর জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন।পরে প্রকল্প কার্যালয় থেকে এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়।তাঁরই ধারাবাহিকতায় মাচাং ঘর এর একটি ডিজাইন প্রকল্প কার্যালয়ে পাঠানো হয় এবং তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এর আশ্রয়ণ প্রকল্পে অন্তুর্ভুক্ত করা হয়।
পরে দাপ্তরিক সকল কার্যক্রম শেষ করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন কে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মাচাং ঘর নির্মাণে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনের জন্য ব্যবহৃত মাচাং ঘর এর একটি দেশব্যাপী পরিচিতি রয়েছে।এই ধরনের ঘর যদি আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে দেয়া হয় তাহলে পাহাড়ের মানুষরা তাদের চিরপরিচিত আবহমান সংস্কৃতির চিরচেনা মাচাং ঘরে বসবাস করার সুযোগ পাবে সেই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নিয়েই মূলত জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মতো সরকারের একটি মেগা প্রকল্পের প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাবরে পাহাড়ের মানুষদের জীবনযাপন এর বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরে মাচাং ঘর তৈরি করে দেয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করেন।
এরই অংশ হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৪র্থ পর্যায়ে পার্বত্য অঞ্চলের জন্য মাচাং ঘরের অনুমোদিত ডিজাইন,প্রাক্কলন ও স্পেসিফিকেশন বিষয়ে অবহিতকরণ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসনক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভা থেকে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি,পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিবেচনায় নিয়ে মাচাং ঘর এর অনুমোদন দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এসময় তিনি,আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে অনুমোদিত পার্বত্য অঞ্চল এর মাচাং ডিজাইনের ঘর প্রাক্কলিত ডিজাইন ও নির্ধারিত মান বজায় রেখে আন্তরিকতার সাথে দ্রুত নির্মান কাজ শুরু করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।জেলা প্রশাসন কার্যালয় এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস অবহিতকরন সভার বিষয়টি অনলাইন দৈনিক সিএইচটি টাইমস ডটকম কে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মতো বিশাল কর্মযজ্ঞে মাচাং ঘর এর আদলে আশ্রয়ণ প্রকল্পেরই আওতায় ঘর তৈরির বিষয়টি কে ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম এর সভাপতি অংচ মং মার্মা।তিনি বলেন,এতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষরা তাদের সেই চিরচেনা ঐতিহ্যের ঘরেই বসবাস করার সুযোগ পাবে।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর এমন দুরদর্শী চিন্তাভাবনা কে স্বাগত জানিয়েছেন বান্দরবান প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক বাদশা মিয়া মাস্টার।তিনি বলেন,সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় পাহাড়ের মানুষকে মাচাং ঘর নির্মাণ করে দেয়া অত্যন্ত যুগোপযোগি একটি সিদ্ধান্ত।
এবিষয়ে সিএইচটি টাইমস ডটকমকে কুহালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মংপ্রু মার্মা বলেন,এটি অত্যন্ত আনন্দের একটি সংবাদ।পাহাড়ের মানুষ এর জীবন বৈচিত্রকে উপলব্ধি করে জেলা প্রশাসক মহোদয় এর সিদ্ধান্ত কে ধন্যবাদ জানালে তা কম হয়ে যাবে বরং এককথায় বলবো জেলা প্রশাসক মহোদয় কে ধন্যবাদই শুধু নয় এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
পাশাপাশি তিনি একটি বিষয় এর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন,মাচাং ঘর গুলোর খুঁটি হিসেবে যদি কাঠের পরিবর্তে পিলার এর খুঁটি দেয়া হয় তাহলে মাচাং ঘরগুলো দীর্ঘদিনের স্থায়িত্ব পাবে এবং টেকসই হবে।এইক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ঘর নির্মাণ এরজন্য সরকারের যে বরাদ্দ দেয়া হয় সেই বরাদ্দকৃত টাকাতেই এই ধরনের খুঁটি দেয়া সম্ভব।
এবিষয়ে সদ্য বিদায়ী রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মো.কায়েসুর রহমান সিএইচটি টাইমস ডটকম কে বলেন,শুধুমাত্র শ্রদ্ধেয় জেলাপ্রশাসক স্যার পাহাড় এর স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলেই তিন পার্বত্য এলাকার ভূমিহীন ও গৃহহীন পাহাড়ি পরিবার মানুষরা মাচাং আকৃতির এই ঘর পেতে যাচ্ছে।এই কৃতিত্বের একমাত্র দাবিদার বান্দরবান পার্বত্য জেলার অনন্য জেলা প্রশাসক শ্রদ্ধেয় ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্যার।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.