জেলা পরিষদ সদর রেস্ট হাউস জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিতর্ক এবং চরম অসন্তোষ জানিয়েছে প্রস্তাবিত কমিটির অনেক সদস্য।এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মসজিদটির সাথে সম্পৃক্ত এলাকাবাসী।জানা যায় তৎকালীন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থোয়াইচা প্রু মাস্টার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে একটি মসজিদ পরিচালনা কমিটি দায়িত্ব পালন করে।পরে মসজিদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বন কর্মকর্তা মরহুম আব্দুর রহমান বিশ্বাস কে তুচ্ছ একটি ঘটনায় তৎকালীন সময়ে হেনস্তা করে আলম খাঁ সহ কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা।এই ঘটনায় জেলা পরিষদ মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত করে জেলা পরিষদ নিজেরাই মসজিদটি পরিচালনা করে আসছিলেন।এরমধ্যে হঠাৎ করে মিজানুর রহমান নামক এক ব্যক্তি নিজেকে সাধারণ সম্পাদক এবং জনৈক শহিদুল্লাহ চৌধুরী নিজেকে কমিটির দাখিলকারী হিসেবে সাক্ষরিত চিঠি পাঠিয়েছেন কমিটির পদাধিকারী বিভিন্ন সদস্যকে।তাদের নিজেদের সাক্ষরিত এই চিঠি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।পরে কমিটিতে অন্তভুর্ক্ত বেশিরভাগ সদস্যরা সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন,এই ধরনের মসজিদ পরিচালনা কমিটি কখন গঠন হলো আমরা নিজেরা আসলে জানিওনা।কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং দাখিলকারীর সাথে যোগাযোগ করেন।তাৎক্ষণিক ফোন করা হয় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি মিজানুর রহমানকে এবং তিনি জানান এটা একটা প্রস্তাবিত কমিটি।১০ মে এই কমিটি নিয়ে মতবিনিময় সভা হবে।তাকে প্রশ্ন করা হয় চিঠি তে আপনি নিজেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করেছেন এটার দালিলিক কোনও প্রমাণ পত্র আছে কিনা এবং আপনি এই কমিটির সদস্যদের সম্মতিতে এটি উল্লেখ করেছেন কিনা,তখন তিনি নিজেই বলেছেন এটা প্রস্তাবিত এবং ওইভাবে তাদের সম্মতি নেয়া হয়নি।তবে তিনি জানান জনৈক শহিদুল্লাহ চৌধুরীর সার্বিক প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে তিনি এই কমিটি সাজিয়েছেন।পরে শিক্ষক মিজানুর রহমান কে প্রশ্ন করা হয় আপনি প্রস্তাবিত যে কমিটির খসড়া চুড়ান্ত করলেন এই কমিটি তে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে।এই বিষয়টি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এবং জেলা পরিষদের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা অবগত আছেন কিনা এবং আপনি সজ্ঞানে এইসব বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটি তে অন্তভুর্ক্ত করেছেন কিনা তখন তিনি জানিয়েছেন,বিষয়টি আমি জানতাম না এবং শহিদুল্লাহ চৌধুরী যেভাবে লিখে দিয়েছেন সেভাবেই তিনি এই কমিটি প্রস্তুত করেছেন।এদিকে জেলা পরিষদ রেস্ট হাউজ জামে মসজিদ কমিটির বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিল হারুণ সর্দার জানিয়েছেন,প্রস্তাবিত হউক আর খসড়া কমিটি হউক কমিটি তে আমাদের নাম পরিচয় গুলো যেভাবে লেখা হয়েছে এটা অত্যন্ত আপত্তিকর।আমি সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করবো কিনা এই কথাটি আমার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা না করেই আমার নামটা সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।এই বিষয়ে কমিটির দুই স্বঘোষিত দাখিলকারী এবং সাধারণ সম্পাদক আমাকে একটি চিঠি দিয়েছে।আমি তাদেরকে স্পষ্ট ভাষায় বলেছি এটা গ্রহণযোগ্য হয়নি।এবিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন,এই মসজিদের কমিটি গঠন বিষয়ে আমি এখন পর্যন্ত কোনও কিছু জানিনা।পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি'র সম্প্রীতির বান্দরবানে বিতর্কিত একজনকেও জেলা পরিষদের মসজিদ কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তভুর্ক্ত করার কোনও সুযোগ নাই। এবিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।কমিটির বিষয়ে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন "এই ধরনের কোনও কমিটি এখন পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন"।তিনি বলেন,জেলা পরিষদ পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি তে বিতর্কিত কাউকে অন্তভুর্ক্ত করার কোনও সুযোগ নাই।জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের সাথে কথা বলে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।উল্লেখ্য,এই মসজিদ ঘিরে একটি অলিখিত রাজনীতির তেলেসমাতি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় প্রবীণ এলাকাবাসী।তাদের ভাষ্যমতে,বিগত ২৫ বছর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী পরে মূখ্য নির্বাহীদের সুদক্ষ নেতৃত্বে এই মসজিদটি পরিচালিত হয়ে আসছে।তাহলে হঠাৎ করে এই ধরনের কমিটিরই বা প্রয়োজন কেনও জরুরী হয়ে উঠলো তা নিয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।যেখানে জেলা পরিষদ এই মসজিদের ইমাম,মোয়াজ্জিন থেকে শুরু করে প্রতিটি আর্থিক বিষয়ের আর্থিক বিষয়টি দেখভাল করে যাচ্ছেন তখন সামান্য চারটি জুমা এবং তিরিশ দিনে বিভিন্ন মানুষের দান করা অর্থের হিসাবে কি এমন গরমিল হয়ে গেলো যেকারনে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা জরুরী হয়ে পরলো।বিশ্বস্ত সুত্র এবং স্থানীয় নির্ভরযোগ্য কিছু মানুষ নিশ্চিত করেছেন, এই মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল গফুর নিজেও জেলা পরিষদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে ভুল বার্তা পাঠাচ্ছেন,বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করছেন।সুতরাং জেলা পরিষদ এই বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান করুক এমনটাই দাবি জানিয়েছেন জেলা পরিষদ সদর রেস্ট হাউজ জামে মসজিদ এলাকায় বসবাসরত ধর্মপ্রাণ এলাকাবাসী।এদিকে জনৈক শহিদুল্লাহ চৌধুরী এই রেস্ট হাউজ জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে যে তথ্য এবং সাক্ষর করেছেন এটিও একটি শুভংকরের ফাঁকি বলেই অভিহিত করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ।মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে এই মসজিদের দেখভাল করা অন্যতম একজন প্রবীণ মুরব্বি জানিয়েছেন,জেলা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া তিনি কিভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দাবী করলেন আমি তা বুঝতে পারছিনা।তবে, জেলা পরিষদ সুত্র নিশ্চিত করেছে জেলা পরিষদ সরাসরি এই ধরনের একটি মাত্র কমিটি অনুমোদন দিয়েছিলো পরবর্তীতে যা বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরীর অভিযোগে তৎকালীন জেলা পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে এবং সেই কমিটি তে শহিদুল্লাহ চৌধুরী একজন সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।পরে বিতর্কিত হওয়ায় তাকে গোরস্থান জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি থেকেও বাদ দেয়া হয়।চাঞ্চল্যকর তথ্য অনুসন্ধান করে জানা যায়,শিক্ষক মিজানুর রহমান স্বয়ং শহিদুল্লাহ চৌধুরীর বাড়িতে দুই বছর ধরে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাসরত।প্রশ্ন উঠেছে মাত্র দুই বছর বসবাসকারী একজন মানুষ ২৫ বছর পূর্বে স্থানীয়দের উদ্যোগ এবং জেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে কিভাবে চিঠি দিলেন এবং কার ইশারা এবং ইন্ধনে চিঠিপত্রে সাক্ষর করলেন এটা তদন্ত হওয়া উচিত।পাশাপাশি অনেকেই বলছেন যারা তৎকালীন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের সমাবেশে সরাসরি হামলায় অংশগ্রহণ করেছিলো তাদেরকে এই ধরনের কমিটিতে স্থান দিয়ে পুরষ্কৃত করার চেষ্টা করছে শহিদুল্লাহ চৌধুরীসহ কতিপয় বিতর্কিত কথিত সমাজসেবক।একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে পরিচালনা কমিটির তিন ছকের একটি কাগজে সহসভাপতি,সদস্য পরিচয়ধারীদের পরিচয়পর্বের ছকে তাদের নামের পাশে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ,বিশিষ্ট সমাজসেবক,বিশিষ্ট দানশীল শব্দ কিভাবে একজন শিক্ষক কিভাবে লিখতে পারলেন এটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.