বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর সার্বিক তত্বাবধানে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর ১২০৪/২০২২ এর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।রবিবার (৫ জুন) পরিবেশ অধিদপ্তর, র্যাব,পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় মোবাইল কোর্টে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.কায়েসুর রহমান।
এসময় মোবাইল কোর্ট বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে অবস্থিত খালেদ সরওয়ার খারেজ মালিকানাধীন কে.আর.ই ব্রিকস এবং সাজু বড়ুয়া মালিকানাধীন ডি.এস.বি ব্রিকস নামক দুইটি ইটভাটার চিমনিসহ সম্পুর্ন ইটাভাটাগুলো গুড়িয়ে দেয়।পরে দুই ইটভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর নির্দেশিত সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী টিমের কর্মকর্তারা।
এবিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.কায়েসুর রহমান বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সমস্ত অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য।এরই পরিপ্রেক্ষিতে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি’র তত্ত্বাবধানে সর্বোপরি সার্বিক দিকনির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।অভিযানের অংশ হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়ির দুটি ইটভাটা সম্পুর্ন অবৈধ প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো।এছাড়াও ভাটায় কাঁচামাল হিসেবে কৃষি জমির উপরিভাগের (টপসয়েল) মাটি ব্যবহার ও জ্বালানী হিসেবে বনের কাঠ ব্যবহার করায় ইট প্রস্তুুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন,লঙ্ঘন করায় ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড উত্তোলন করা হয়েছে।অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর,বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.ফখর উদ্দিন চৌধুরী,জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.এস.এম.শাহনেওয়াজ মেহেদী এসময় উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর,বান্দরবান কার্যালয়ের জুনিয়র কেমিস্ট মো.আব্দুস সালাম।
উল্লেখ্য,জনস্বার্থ বিবেচনায় হাইকোর্ট এর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এর রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জানুয়ারি তিন পার্বত্য জেলার সব অবৈধ ইট ভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।সাথে একটি রুল জারি করে আদালত।রুলে বান্দরবান,খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হওয়া সব ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছিলো আদালত।
একইসঙ্গে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা পরিচালনার জন্য ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর ধারা ৪.৫.১৪.১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়।সেদিন রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় উপস্থিত ছিলেন।আদালতের এই নির্দেশনা জারির পরপরই তিন পার্বত্য জেলায় জেলা প্রশাসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তিন জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধ ইটভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।