আমরা সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা কে সম্মান জানাতে চাইঃ মন্ত্রী বীর বাহাদুর


নিজস্ব সংবাদদাতা প্রকাশের সময় :১৮ জুন, ২০২২ ৩:২৯ : পূর্বাহ্ণ 440 Views

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ঐক্য থাকতে হবে।মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যহীনতার কারনে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার,আলবদর,আল শামস সুযোগ নিবে,সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে।পরিকল্পনাহীনতা দুরে সরিয়ে দিতে হবে।বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবতে হবে,বাংলাদেশ মানেই মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ,বাংলাদেশ মানেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ।আমরা সকল বীরমুক্তিযোদ্ধা কে সম্মান জানাতে চাই।বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা সবচেয়ে বেশি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির একমাত্র স্তম্ভ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম-এর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এমন কথাই বলেছেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

এসময় মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম এর একমাত্র খেতাবধারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম শুধু পাহাড় নয় সারা বাংলাদেশের গৌরব।জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।আজকে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানাতে পেরে আমরা গর্বিত।এসময় মন্ত্রী বীর বাহাদুর স্মৃতিচারণ করে বলেন,ইউ কে চিং বীর বিক্রম একজন ভালো হকি খেলোয়াড় ছিলেন।একসময় হকি কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন।তাঁরই সম্মানে বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামকে “ইউ কে চিং বীর বিক্রম স্টেডিয়াম” নামকরণ করা হচ্ছে।ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

তিনি বলেন,জাতির পিতাকে হত্যার পর ঘাতকেরা ভেবেছিলো বঙ্গবন্ধু কে হত্যা করা মানে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেয়া।সেই ৭৫ এ সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় জাতির পিতার দুই কন্যা বেচেঁ গিয়েছিলেন।আজকে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ এর উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

দেশ স্বাধীন হবার পর হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশ কে তলাবিহীন ঝুঁড়ি আখ্যা দিয়েছিলো।ফকির আর ভিক্ষুকের দেশ বলেছিলো।এমনকি বাংলাদেশ স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে পারবে কিনা এমন কথাও বলেছিলো সেসময়।আজকে সারা বিশ্ব বলছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।আজকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ।সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও বলেন,বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে।পদ্মা সেতু তৈরিতে বিশ্বব্যাংক টাকা দেয়ার আগেই বলে দিলো বাংলাদেশে দুর্নীতি হয়েছে।যেখানে টাকাই দিলো না সেখানে দুর্নীতিটাইবা কিভাবে হলো।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংক কে বলেছিলেন,তোমাদের টাকা আমার লাগবেনা,আমি আমার দেশের মানু‌ষের টাকাতেই পদ্মা ব্রীজ করবো।আগামী ২৫ জুন সেই ব্রীজটি উদ্বোধন করা হবে।

কর্ণফুলি টানেল,রুপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ,মেট্রো রেল এর মতো বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে উল্লেখ করে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন,গভীর সমুদ্র বন্দরসহ কি হচ্ছে না বাংলাদেশ জুড়ে।সুতরাং নেতা হলেই চলেনা,সু নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে,দেশপ্রেম থাকতে হবে সাথে অভিষ্ঠ লক্ষ্য থাকতে হবে।২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মাতৃভাষা দিবসকে সারা পৃথিবীর মানুষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করছে।

৭৫ পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনতে কষ্ট হতো এমন কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,আজকে সারা বিশ্বের মানুষ বলছে এটি একটি ঐতিহাসিক বক্তব্য।ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ জাতির পিতার প্রতি সম্মান জানিয়ে এই বক্তব্য সংরক্ষণ করেছে।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষণ ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন নীতিমালা-২০২১ এর আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম-এর ৯০তম জন্মবার্ষিকী-২০২২ উদযাপি অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

শুক্রবার (১৭ জুন) বিকেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিউট,বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর আয়োজনে জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুরাইয়া আক্তার সুইটি,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল,জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাস,ক্যা সা প্রু মারমা,তিং তিং ম্যা এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম এর সহধর্মিনী ড.থুই সা নু মার্মা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কয়েক রঙ এর বেলুন এবং শান্তির প্রতিক কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি।পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,বঙ্গমাতা ফজিলতুন্নেসা মুজিব এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এছাড়াও ধর্মীয় প্রার্থনা এবং ৫২ শিশুর কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে শিশু শিক্ষার্থীরা।জন্মবার্ষিকী উদযাপন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিউট, বান্দরবান এর উপপরিচালক মং নু চিং।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম এর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।একই সময় বান্দরবানের ৪৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীসহ বেশ কয়েকটি দিবস ভিত্তিক আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি বীর বাহাদুর।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউ কে চিং বীর বিক্রম এর সহধর্মিনী ড.থুই সা নু মার্মাকে এসময় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন মন্ত্রী বীর বাহাদুর।পরে অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য,উক্য চিং বা ইউ.কে.চিং মারমা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একমাত্র আদিবাসী বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।ইউ.কে. চিং ব্রিটিশ ভারতের পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান মহকুমার উজানী পাড়ায় ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।২৫ জুলাই,২০১৪ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যু বরন করেন।

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!