বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় দুর্গম ক্রাংসি পাড়ায় সেনা মৈত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয় তথা ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।বিলুপ্তের পথে থাকা রেংমিটচ্য ভাষা রক্ষায় বান্দরবান সেনা রিজিয়ন এর সার্বিক প্রচেষ্টায় ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রটি আলোর মুখ দেখলো।রবিবার (১০ মার্চ) বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ড.গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ এসজিপি,এনডিসি,এএফডব্লিউসি,পিএসসি, পিএইচডি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।এসময় বান্দরবান সেনা রিজিয়নের নবনিযুক্ত কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান,এএফডব্লিউসি পিএসসি উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও আলীকদম রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শওকাতুল মোনায়েম,আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমান,ক্রাংসিপাড়াবাসী ও নবনির্মিত স্কুলের শিক্ষার্থীরা।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচ্য ভাষা সম্পর্কে সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।এই ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে আমরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।বান্দরবানে শিক্ষার প্রসার,চিকিৎসা সহায়তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন মানোন্নয়নে সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।এসময় শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়।এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে আলীকদম (৩১বীর) সেনা জোন।স্থানীয়রা জানান,বর্তমানে স্কুলটি তে ৪০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন চারজন।জানা যায়,বহু বছর ধরে পাহাড়ের সার্বিক শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন।সংশ্লিষ্টরা বলছেন এতে ভাষাটি রক্ষা করা যাবে।রেংমিটচ্য ভাষায় বর্তমানে মাত্র ৭ জন মানুষ কথা বলেন।এদের সবার বয়সই ৬০ বছর।জানা যায় আলীকদম সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দুরে ক্রাংসি পাড়ায় ২৭টি ম্রো পরিবারের বসবাস ছিলো।এই পাড়ায় বসবাসরত কয়েকটি পরিবারের সদস্যরাই মূলত রেংমিটচ্য ভাষায় কথা বলতেন।
রেংমিটচ্য ভাষার অভিধানের লেখক ইয়াংঙান ম্রো বলেন, ‘২০১৪ সালেও রেংমিটচ্য ভাষার ৩২ জন ছিলেন।২০২৩ সালে তা কমে মাত্র ছয়জন হয়েছে।বাকিরা মারা গেছে।যারা বেঁচে আছেন তাদের সবার বয়স গড়ে ৬০ বছরের ওপরে।তারা মারা গেলে মানব সভ্যতা থেকে একটি ভাষার পরিসমাপ্তি ঘটবে।’