সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-পৃথিবীর সবচেয়ে মর্মস্পর্শী ছবি কোনটি অথবা পৃথিবীর সবচেয়ে করুণ ছবি কোনটি? মস্তক বিচ্ছিন্ন করা এক মহিলার কোলে স্তন্যপানরত এক মৃত শিশু– ছবিটি কেমন হতে পারে? প্রশ্নের উত্তর বের করতে গিয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে অনেক ধরণের ছবি পেলাম। সেগুলোর বর্ণনা বা ব্যাখায় না গিয়ে কেন এই ধরণের ছবির অনুসন্ধান প্রয়োজন হলো, সেটা ব্যক্ত করাই বেশী প্রাসঙ্গিক।
পার্বত্য অঞ্চলের বিষয়াদির প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহের কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতে এ সংক্রান্ত কিছু থাকলে মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়। যার ধারাবাহিকতাই, সর্বশেষ যে ঘটনা নজর কেড়েছে, তা হল – বরকল এলাকার ভূষণছড়ার গণহত্যা। পার্বত্য চট্টগ্রামে সবচেয়ে বড় গণহত্যা বলে অভিহিত করা হয় এই হত্যাকাণ্ডকে।
এই গণহত্যা সংক্রান্ত একটা লেখা পড়েই, আমার মনে উপরোক্ত প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। তাই আরো কিছু তথ্যের জন্যে কিছুটা ঘাটাঘাটি করতে রীতিমত বাধ্য হয়েছি। এই ঘটনা নিয়ে বেশী পোস্ট এবং লেখা পেয়েছি পাহাড়িদের সমর্থক বা সমমনা বেশ কিছু কিছু পেজে। যেখানে বক্তব্য প্রায় একই– ৩১ মে বাঙ্গালী, সেটলার, সেনাবাহিনী এবং তৎকালীন বিডিআর এর সহায়তায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ৪০০ পাহড়িকে হত্যা করা হয়; শুধু তাই নয়, অনেক নারী গণধর্ষণের শিকার এবং অনেক শিশুও নারকীয় অত্যাচারের শিকার পর্যন্ত হয়েছিল।এমনি এক লেখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. আমেনা মোহসিনের দ্য পলিটিক্স অব ন্যাশনালিজম বইয়ের সুত্র উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই, বইটি খুঁজে দেখা হলো, সত্যিই, বইয়ের পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, “এতে ১১০ জন পাহাড়ি শিশু ও নারী-পুরুষ নিহত হন। অনেক পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।” ( আমেনা মহসিন, দি পলিটিক্স অফ ন্যাশনালিজম – দি কেস অফ চিটাগং হিল ট্রাক্টস বাংলাদেশ, প্রকাশ ১৯৯৭, পৃষ্ঠা- ১৮২ দ্রষ্টব্য) ।
উল্লেখ না করে পারছি না যে, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর সংগৃহিত তালিকা অনুযায়ী এই হামলায় শিশুসহ সর্বমোট ৬৭ জন উপজাতীয় নিহত হয়েছিল। (এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ১৯৮৬, পৃষ্ঠা-১৩-১৯।)
অর্থাৎ, পাহাড়িদের বর্তমানকালের তরুণ এবং শিক্ষিত প্রজন্মের কাছে ৩১ মে’র দিনটি একটি ভয়াবহ দিন হিসেবেই চিহ্নিত হতে থাকবে। অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই বাঙ্গালীদের প্রতি ঘৃণা আর বিদ্বেষ নিয়েই এই প্রজন্ম বড় হতে থাকবে। কারণ, আপাতদৃষ্টিতে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ, যার সবচেয়ে বড় উৎস সোশ্যাল মিডিয়া, এই দিনের বিষয়ে তাতে বাঙ্গালী কর্তৃক পাহাড়িদের উপর অত্যাচারের সাক্ষ্যই বহন করছে।
লিখেছেনঃ-মাহের ইসলাম,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.