রাজধানী ঢাকার বুকে চলছে পার্বত্য মেলা।পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবন-কৃষ্টি,সংস্কৃতি,পোশাক-পরিচ্ছদ,ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক তথ্যাদি সমতলের মানুষের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী প্রচার ও বিপণনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রে এ বছর পার্বত্য মেলায় অংশ নিয়েছে ৯৭টি পাহাড়ি স্টল।পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য,খাবার,হস্তশিল্প ও ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য পাওয়া যাচ্ছে একই ছাদের নিচে।আর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিতে শেষ মুর্হুতে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।আর চার দিনের এই পার্বত্য মেলা শেষ হচ্ছে আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী। মেলা চলছে সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
জানা যায়,পার্বত্য মেলায় সারিসারি স্টলে সাজানো পাহাড়ি নানা ধরনের পোশাক,খাবার ও পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা ফলমূল।এছাড়াও রয়েছে পাহাড়ের নানান পণ্যসামগ্রী।যা দেখে মুহূর্তেই মনে এ যেন রাজধানীর বুকে জন্ম নেওয়া এক টুকরো পাহাড়।তবে পার্বত্য মেলা হলেও পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনগণের পাশাপাশি দেখা যায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি।
বাঁশের ভেতর কলাপাতায় মুড়িয়ে তৈরি হয় চিকেন ব্যাম্বু। পাহাড়ি নানা ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে এবারই প্রথম মেলায় এসেছেন খাগড়াছড়ির কং মারমা।পার্বত্য এলাকার খাবারের স্বাদ নগরবাসীদের কাছে তুলে ধরতে মেলায় অংশ নিয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আমরা নিজস্ব সংস্কৃতি ও খাবারগুলো সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারবো। বিভিন্ন ধরনের পিঠা আছে।সবগুলোই পাহাড়ি বিন্নি চালের গুড়া দিয়ে তৈরি করা।সবচেয়ে বেশি ভিড় চোখে পড়ে পাহাড়ি ফলের স্টলগুলোতে।পাহাড়ি পেঁপে,কলা,আনারস,তেঁতুল থেকে শুরু করে ৫৬ ধরণের কৃষিপণ্য নিয়ে এবার মেলায় অংশ নিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ।অর্গানিক আর ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা বেশি এসব পাহাড়ি ফল ও মসলার।
পার্বত্য মেলায় ঘুরতে আসা কয়েকজন বাঙালি জনগোষ্ঠীরা জানান,মূলত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের জীবন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পার্বত্য মেলায় আসা।এছাড়া পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা বিশুদ্ধ ফলমূল যা ঢাকায় পাওয়া যায় না সেসব কেনার জন্যই এখানে এসেছি।ক্রেতারা বলেন,এখানের ফলগুলো খুব মিষ্টি এবং ফরমালিনমুক্ত থাকে।এই ফলগুলোতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি।যে কারণে আসা হয়। ত্রেতারা আরো জানান,পাহাড়ের বিখ্যাত খাবার বাঁশ কোড়ল যা পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালি জনগোষ্ঠীর খুবই পছন্দ। তাই পাহাড়ের জনপ্রিয় কিছু খাবারের দোকান ঘুরে খাবার কিনবেন বলেও জানান তারা।শুধু পাহাড়ি ফল নয় হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্যের স্টলগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের আনাগোনা। রাজধানীতে বসে পাহাড়ি অঞ্চলের পণ্যের এমন প্রদর্শনীতে খুশি নগরবাসী।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় পার্বত্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।এতে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গর্ণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীএমপি।উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।উল্লেখ্য,২০১৪ সাল থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের আয়োজনে পাহাড়িদের জীবন,কৃষ্টি, সংস্কৃতি,ঐতিহ্য এবং পাহাড়ে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পার্বত্য মেলার আয়োজন করা হয়।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.