বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি ও জেএসএস সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা এখন নিজেকে আদিবাসী দাবী করলে অতীতে বিভিন্ন সময় নিজেকে উপজাতি বা ক্ষুদ্র জাতি বলে দাবী করতো। সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আর্কাইভে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, ১৯৯২ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদেরকে ক্ষুদ্র জাতি বলে আখ্যায়িত করেন। সে সময়ের দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটির অংশ বিশেষ পার্বত্যনিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা উপজাতি নই ক্ষুদ্র জাতি।’ খাগড়াছড়ির পানছড়ির দুদকছড়ায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পিসিজেএসএস’র শীর্ষস্থানীয় নেতা রূপায়ন দেওয়ান, যোগাযোগ কমিটির আহ্বায়ক বাবু হংসধ্বজ চাকমা, অন্যতম সদস্য মো. শফি এবং পানছড়ি থানা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাবুদ্দিন। ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় শুরু হয়ে এ সংবাদ সম্মেলন বেলা ৩টায় শেষ হয়।
সন্তু লারমা সংগঠনের পক্ষ থেকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভিন্ন দশ ভাষাভাষি ও ভিন্ন জাতির আবাসভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিসত্তা, জাতীয় অস্তিত্ব এবং সংস্কৃতি ও কৃষ্টি রক্ষার ক্ষেত্রসমূহ বিপদের প্রেক্ষিত্রে জুম্ম জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২১ বছর ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি দুঃখের সাথে বলেন, আমাদের আন্দোলন সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, সভা-সমিতিতে অপব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। —’
‘তিনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে পার্বত্য সমস্যা নিরসনের উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য সংবাদপত্রের প্রতি আহ্বান জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উপজাতি নই, আমরা ক্ষুদ্র জাতি।’
সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা আগের দিন সরকারের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠক সম্পর্কে সন্তু লারমা বলেন, ‘আলোচনার অগ্রগতি আপেক্ষিক।’ জনসংহতি সমিতির সংশোধিত ৫ দফা দাবির ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইন পরিষদ সম্বলিত প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি আমরা আর করছি না। তবে শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।’
উল্লেখ্য ৯ আগস্ট ২০১৪ সালে এক আলোচনা সভায় সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার এমপি বলেছিলেন, ‘আমি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে যখন প্রথম আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন করেছিলাম, তখন সন্তু লারমা বলেছিলেন এই দেশে কোন আদিবাসী নাই, এখানে আমরা সবাই উপজাতি। জুম্ম জনগণের আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আদিবাসী দিবস পালন করা হচ্ছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের সময়ে আমি সন্তু লারমাকে বলেছিলাম এসময়ে উপজাতির পরিবর্তে আদিবাসী বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ফেলি, তখনও সন্তু লারমা রাজি হননি। তখনও সন্তু লারমা বলেছিলেন আমরা আদিবাসী নই, আমরা উপজাতি।
অপরদিকে, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যরিস্টার দেবাশিষ রায় রাষ্ট্রীয়ভাবে অফিসিয়ালি লিখেছেন বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নাই, কিছু জনগোষ্ঠী আছে উপজাতি। তাহলে এখন কেন আদিবাসী দাবিতে সংগ্রাম সংঘর্ষের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি কোন ষড়যন্ত্রের আলামত ?
[নোট: নিজেদের জাতিগত পরিচয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সভাপতি ও জেএসএস নেতা সন্তু লারমার বর্তমান অবস্থানের কারণে প্রাসঙ্গিক হওয়ায় সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত ১৯৯২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলার বাণীতে প্রকাশিত সংবাদটির চুম্বক অংশ পাঠকদের সমীপে পেশ করা হলো।]
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.