চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া রেল ক্রসিং এ পর্যটক বাহি মাইক্রোবাসের সাথে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগামী মহানগর এক্সপ্রেসের মুখো মুখি সংঘর্ষে ঘটনা স্থলেই ১১ পর্যটকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরো ৬ পর্যটকের আবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।মিরসরাই থানা পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স যৌথ ভাবে নিহত ১১ জনরে লাশ উদ্ধার করেছে। দূর্ঘনার কারনে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল আপাদত বন্ধ আছে।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১টা ৩০মিনিটের দিকে উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র খৈয়াছড়া রোড়ের রেল ক্রসিং এ এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ঘটে।
সরজমিনে পরিদর্শন করে ও স্থানিয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলা থেকে সকালে মাইক্রো যোগে ১৮ পর্যটক মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ঝরণায় ঘুরতে আসে।সারাদিন ঘুরাঘুরি শেষে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটিরে দিকে ফিরছিল তারা।রেললাইনের গেইট ম্যান রেল আসার কারনে গেইটবার দিয়ে নামাজের জন্য মসজিদে চলে যায়। কিন্তু পর্যটন বাহি মাইক্রোতে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সের যুবকরা উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে রেল লাইন ক্রস করার সময় দ্রুত গতীতে ট্রেইন আসার বিষয়টি লক্ষ করতে পারেনি।তাদের একজন গাড়ি থেকে নেমে গেইটবার তুলে মাইক্রোটি পার করার চেষ্টা করছিল এমন সময় মাইক্রো থেকে নেমে যাওয়া যুবক ছাড়া বাকি সবাইকে নিয়ে দ্রুত গতীর ট্রেনটি প্রায় দেড় কিলোমিটার ছেছিয়ে নিয়ে যায়।এতে মাইক্রোর দরজার পাশে থাকা ৬ যুবক লাফিয়ে মারাত্মক আহত আবস্থায় বেছে গেলেও ঘটনা স্থলেই মারা যায় হতভাগা ১১ যুবক।
দূর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই মিরসরাই থানা পুলিশ ও মিসরাই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনা স্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।দূর্ঘটনার শব্দ শুনে স্থানিয় মসজিদ থেকে মুসল্লিরা এগিয়ে এসে গুরতর আহত ৬জনকে স্থানিয় হাসপাতালে প্রেরন করে।এছাড়া নিহত ১১ জনের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।১১ জনের লাশ বুঝে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন রেল পুলিশের সীতাকুন্ড মিরসরাই অংশের ইনচার্জ এসআই খোরশেদ আলম।এছাড়া তিনি বলেন,রেলের সাথে মাইক্রোটি আটকে থাকায় রেল রাইল চলাচল উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে নাই। মাইক্রোটি ট্রেন থেকে আলাদা করে চলাচল উপযোগী করা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ আপাদত বন্ধ আছে।
ডমরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ ইমাম হোসেন জানান,দূর্ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনা স্থলে পৌছে দ্রুত উদ্ধার কাজ শুর করি।১১ পর্যটকের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।এছাড়া ট্রেনের সাথে আটকে থাকা মাইক্রোটি উদ্ধার করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা চলছে।এদিকে স্থানীয় সেবা মেডিক্যাল হাসপাতাল জানায়,একজন আহত পর্যটকে অচেতন আবস্তায় আন হলে তারা তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রেরণ করে তাবে তার নাম জানা যায় নি।
অন্য দিকে মিরসরাই উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।৬জন আহত পর্যটকে চিকিৎসার জন্য স্থানিয়রা নিয়ে গেলে ৫ জনের অবস্তা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাদেরকে চমেকে পাঠানো হয়েছে।হাসপাতালের ইমাজেন্সি শাখার তথ্যমতে আশঙ্কাজন ৫ পর্যটকের নাম শওকত,সরোয়ার,তাসনিম,আয়াত এবং ইমন।তবে কোন প্রকার আঘাত প্রাপ্ত না হওয়ায় একজনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়নি।
হাটহাজারি সূত্রে জানা গেছে,হাটহাজারীর একটি কোচিং সেন্টার থেকে কোসিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাই মাইক্রোযোগে ঘুরতে এসেছিল মিররাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরণায়।নিহত পর্যটকরা বেশির ভাগই এসএসসি পরীক্ষার্থী। নিহতদের মধ্যে জিসান, সজিব, সৈকত ও মারুফ এসএসসি পরীক্ষার্থী।এছাড়া নিহত ও আহতদের মধ্যে ৬ জন একই বাড়ির সদস্য বলেও জানা গেছে