টেকনাফে হচ্ছে দেশের প্রথম বিশেষায়িত পর্যটন অঞ্চল


প্রকাশের সময় :১৪ মার্চ, ২০১৭ ২:৫৪ : পূর্বাহ্ণ 1298 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদী।এর মাঝখানে ছোট্ট একটি দ্বীপ।স্থানীয় নাম ‘জালিয়ার দ্বীপ’।টেকনাফ শহরে ঢোকার মুখে উঁচু ন্যাটং পাহাড় থেকেই চোখে পড়ে দ্বীপটি।পাহাড় আর নদীঘেরা নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর প্রাকৃতিক এই দ্বীপটিকে ঘিরেই গড়ে উঠছে দেশের প্রথম বিশেষায়িত পর্যটন অঞ্চল।‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’ নামের এই বিশেষ পর্যটন অঞ্চল স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।ঝুলন্ত ব্রিজ,রিসোর্ট,ক্যাবল কার,ওসেনারিয়াম,ভাসমান রেস্টুরেন্ট,ইকো-কটেজ, কনভেনশন সেন্টার,সু্ইমিং পুল,ফান লেক,অ্যাকুয়া লেক,মাছ ধরার জেটি,এমিউজমেন্ট পার্ক,শিশু পার্কসহ নানাবিধ বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।চীন,থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর,মালয়েশিয়া ও জাপানসহ দেশীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।জানা গেছে,পুরো টেকনাফকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাইছে সরকার।এজন্য টেকনাফে প্রায় ১৪শ’ একর জমির উপর দুটি বিশেষ পর্যটন এলাকা স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।সম্প্রতি এ সকল স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো.আবুল কালাম আজাদ,বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীসহ ভূমি,নৌ পরিবহন,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ,বিদ্যুত্,পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ।পুরো কক্সবাজারে সরকারের বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ পরিদর্শন ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন বাধাগুলো তাত্ক্ষণিক সমাধানের উদ্যোগও নেওয়া হয় এ সফরে।জালিয়ার দ্বীপে নাফ ট্যুরিজম পার্কের মোট জমির পরিমাণ ২৭১ দশমিক ৯৩ একর।যা ভবিষ্যতে আরো বর্ধিত করার সুযোগ রয়েছে।ট্যুরিজম পার্কটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে প্রায় ২৫ হাজার সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে এবং পরোক্ষভাবে আরো প্রায় ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো.আবুল কালাম আজাদ বলেন,দেশে পরিকল্পিত শিল্পায়নের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে।এক্ষেত্রে কক্সবাজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কেননা এই অঞ্চলের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে একাধিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।সেইসাথে কক্সবাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিশেষায়িত ট্যুরিজম পার্কও হবে।চট্টগ্রামের মিরসরাইকে অর্থনৈতিক হাব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।সবমিলিয়ে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগুচ্ছে। সেজন্য এই অঞ্চলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন,নাফ ট্যুরিজম পার্কটি হবে বাংলাদেশের প্রথম ট্যুরিজম পার্ক যা বিনোদন জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।এখানে থাকবে সুস্থ বিনোদনের সকল ব্যবস্থা।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।তিনি বলেন,মাটি ভরাট,সবুজ বেষ্টনী তৈরি,ঝুলন্ত ব্রিজ স্থাপনসহ এই দ্বীপটিকে আধুনিক পর্যটন স্পট উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।তবে এ অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থ আরো উন্নত করতে হবে।কেননা,যে অঞ্চলে ‘ম্যাস ট্রানজিট’ গড়ে উঠে সেসব অঞ্চলে পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করে।বেজা সূত্র জানায়,ঢাকা থেকে জালিয়ার দ্বীপের দূরত্ব ৪৫৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৮৫ কিলোমিটার।কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে এর দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার।এই দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে এক ঘণ্টার কম সময় লাগবে।বর্তমানে দেশি-বিদেশি পাঁচতারকা হোটেলের মালিকেরা জালিয়ার দ্বীপে পর্যটনকেন্দ্র করতে আগ্রহী।বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তারা যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করতে চায়।দ্বীপটি আগামী দুই তিন বছরের মধ্যেই পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।এদিকে টেকনাফে সমুদ্রসৈকত ঘিরে বেজার তত্ত্বাবধানে ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক’ নামের আরেকটি বিশেষ পর্যটন স্পট গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।আরো বৃহত্ আকারে ১০২৭ একরের জায়গাজুড়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ করে বেজাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।এই এলাকায় পাঁচ তারকামানের হোটেল,ইকো-ট্যুরিজম,বিনোদনসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!