মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম,বান্দরবান প্রতিনিধি (বান্দরবান সীমান্ত থেকে ঘুরে এসে):-পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এবারের সহিংসতা ভিন্ন চরিত্রের।জানা যায়,হারাকা আল-ইয়াকিন থেকে নাম পরিবর্তিত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-সংক্ষেপে আরসা। মিয়ানমারের সরকারি পুলিশ পোস্ট-সেনাবাহিনীর স্থাপনায় হামলা থেকে এই সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছে।আরসা’র দ্বিতীয়বারের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই পাল্টা অভিযান।রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৫০ এর দশক থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও),আরাকান রোহিঙ্গা ইন্ডিপেন্ড্যান্ট আর্মি (এআরইএফ) সহ বিভিন্ন সংগঠনের নামে বিদ্রোহী তৎপরতা চলে আসছে।যার পাল্টা জবাবে দেশটির সেনাবাহিনীও বেশ কয়েকবার নিষ্ঠুর অভিযান হত্যা-নির্যাতন,অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর।বাধ্য করছে দেশ ত্যাগের।এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও হামলার চরিত্র অনুধাবন করে কাউন্টার ইন্সারজেন্সি বা নিরাপত্তা অভিযান যে নামেই হোক নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের ওপর জ্বালাও-পোড়াও,হত্যা-নির্যাতন চালানো উচিত হয়নি বলে মনে করছেন জাতীয় আন্তর্জাতিক নানান সংগঠন।সরজমিনে গিয়ে প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে আসা নিরীহ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি।তাঁরা অধিকাংশই জানেন না কেন তাঁদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জ্বালাও-পোড়াও অভিযান চালাচ্ছে।এখন হাজার হাজার নিরীহ রোহিঙ্গা নারী-শিশু প্রাণ বাচাঁতে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এসে আশ্রয় নিয়েছে।তাঁদের অমানবিক জীবনযাপন সত্যি অসহনীয়।একইভাবে রাখাইন,মংডু ও বুচিডংয়ের কয়েক হাজার মুসলিম ও হিন্দু বাংলাদেশের শরর্ণাথী শিবিরে ও জিরো পয়েন্টের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে।কথিত রোহিঙ্গা সংগঠন আরসা’র সর্বাধিনায়ক দাবি করা আতা উল্লাহ এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন,মিয়ানমারে অংসান সুচি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন।সেনাবাহিনীর বেষ্টনি থেকে বের হয়ে তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য কিছু করতে পারেননি।এ জন্য তাঁরা আত্মরক্ষামূলক সশস্ত্র প্রতিরোধ করছেন।হারাকা আল-ইয়াকিন সংগঠনটির নাম নিয়ে সারা বিশ্বে-এমনকি রোহিঙ্গা দরদি হিসেবে হরেক স্বার্থে কলকাঠি নাড়েন তাঁদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া হওয়ায় নতুন করে আরসা গঠন করা হয়েছে।কিন্তু নাম পরিবর্তন হলেও সংগঠনটির চরিত্র পরিবর্তন হয়নি।অপরদিকে,বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিতে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে।অথচ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের পর যে বহুমাত্রিক মানবিক সংকট তৈরি হবে সেই সংকটের দায় নেবে কে?যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানামার ঠেলে দিচ্ছে পরে তাঁদের ফেরত নিতে আগ্রহী হবে কি দেশটি?অথবা রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে?যদি মিয়ানমার ফেরত না নেয় অথবা রোহিঙ্গা ফিরে যেতে না চায় তাতে সৃষ্ট সমস্যয় সমাধানে কোন দায়িত্বপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়নি বিশ্ব নেতাদের কাছে।প্রশ্ন হচ্ছে এখন যারা দরজা খুলে দিতে বলছেন,তাঁরা কি ওই রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করার জন্য আদৌ কোন পদক্ষেপ নিবেন? তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলে সমস্ত খরচ তার দেশ বহন করবেন।কিন্তু সংকট তৈরি পর থেকে এখনও কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মেকি দরদের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাববার বিষয় রয়েছে।কয়েকটি দেশের কিছু সংস্থার লোকজনকে নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়।এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য অস্পষ্ট।তাছাড়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি প্রস্তাবে চীন ও রাশিয়া ভেটো দিয়েছে।সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে বাংলাদেশের জন্য গলার কাটা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.