বান্দরবান সীমান্তে জেলা প্রশাসকের পরিদর্শন,রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয়


প্রকাশের সময় :২৯ আগস্ট, ২০১৭ ১২:০১ : পূর্বাহ্ণ 690 Views

মোহাম্মদ আলী বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:-
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুনধুম তুমবূরু সীমান্তের পাহাড়গুলোতে আরো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের জন্যে অবস্থান নিয়েছেন।ছোট ছোট টিলার উপর রোহিঙ্গারা পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানে থাকছেন।অন্যদিকে ঘুনধুম সীমান্তে কলা বাগান এলাকায় শনিবার বিকেলে অনুপ্রবেশ করা সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এখনো অবস্থান করছেন।তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মানবিকদিক বিচার করে খাবার ও পানি দিয়ে সহায়তা করছেন।তবে কলা বাগান থেকে অনেক রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী উখিয়ার কুতু পালং শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।রবিবার দুপুরে ঘুনধুম তুমব্রু সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে দেখেন বান্দরাবন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক,প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ টিলাগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন।সীমান্তর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে তারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন।ঘুনধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান,মানবিক সহায়তায় জিরো লাইনে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাবার ও পানি দেয়া হচ্ছে।এছাড়া শরণার্থী ক্যাম্প থেকেও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।তবে কোনো রোহিঙ্গা যাতে সীমান্ত থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেদিকে নজরদারী রাখা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃকামাল হোসেন জানান,সীমান্তের কিছু দালাল রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ক্যাম্প ও অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্যে তৎপরতা চালাচ্ছে।ইতিমধ্যে অনেকে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।তবে বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই আসছে কক্সবাজারের বালুখালি সীমান্ত দিয়ে। ঘুনধুম তুমব্রু সীমান্তে বিজিবি ও স্থানীয়রা কড়াকড়ি করায় রোহিঙ্গারা জিরো লাইনে আসলেও তারা বাংলাদেশের ভূখন্ডে সহজে প্রবেশ করতে পারছে না। এদিকে রোববার সকালেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঢেকুবনিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়েছে।সেখানে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ফলে আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা সীমান্তে কাটা তারের বেড়া ও বিজিবির বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে পড়ছে।রোববার সকালে প্রাণ ভয়ে ঢেকুবনিয়ার বাজার পাড়া থেকে ঘুনধুমে চলে আসেন ওই এলাকার মুদি দোকানী আবুল কাশেম।তিনি জানান,শনিবার হামলার পর থেকে সেখানকার গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।নির্বিচারে গুলি ও হেলিকপ্টার থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে।কতজন যে ঢেকুবনিয়া ও আশপাশের এলাকায় মারা গেছে তা কেউ জানতে পারছে না।কলা বাগান এলাকায় আশ্রয় নেওয়া ছাবেকুন্নাহার বলেন,দুই দিন বনে জঙ্গলে লুকিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন বাঁচিয়েছি।কিন্তু আমার বাবা ভাই-বোনকে কোথায় তার কোনো খবর পাচ্ছি না।তারা বেঁচে আছে না মারা গেছে এই খবরটুকুও কেউ দিতে পারছেনা।এদিকে সীমান্তে লোকজনদের অভয় দিতে ঘুনধুমে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সভা করেছেন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক। সভায় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ছাড়াও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।রোহিঙ্গারা যাতে সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকে পড়তে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহŸান জানান জেলা প্রশাসক।উলে¬খ্য গত বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, মংডুসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা একযোগে নিরাপত্তা বাহিনীর ২৪ টি ক্যাম্পে হামলা করে।এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।এরপর সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয়রা মিলে রোহিঙ্গাদের গ্রামে হামলা করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!