বাংলাদেশে বসবাসকারী বম সম্প্রদায়ের খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ ১৮ জানুয়ারি থেকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলা সদরে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এই উৎসবে দেশি-বিদেশি প্রায় পাঁচ হাজার অতিথির যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
রুমা উপজেলা সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা ঘটবে আজ সন্ধ্যা ৬টায় বিসিসি হলে উৎসর্গ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। তবে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে আগামীকাল শনিবার সকাল ৯টায় স্কুল মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। কাল দুপুর ১টায় পাঁচ হাজার অতিথির জন্য আয়োজন করা হয়েছে সম্মিলিত সুহূদভোজ। সন্ধ্যায় বিশেষ অতিথিদের বক্তৃতার পাশাপাশি আয়োজন থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। ২০ জানুয়ারি অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালার সমাপ্তি ঘটবে।
১৯১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার নোয়াপতং এলাকায় ছয়-সাতটি পরিবার বিশিষ্ট ভাইরেলহ গ্রামে যিশু খ্রিস্টের সুসমাচার পৌঁছে দেন রেভারেন্ড এড্উইন রোলেল্ডস। বর্তমানে ভাইরেলহ গ্রামের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও যিশু খ্রিস্টের এই বাণী পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে গড়ে ওঠা বম জনগোষ্ঠীর গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই দীর্ঘকালের প্রকৃতি পূজারি বম সম্প্রদায়ের প্রায় সবাই খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হয়ে যায়।
খ্রিস্টের সুসমাচার প্রচারের শতবর্ষপূর্তিতে বম জনজাতি অধ্যুষিত প্রায় সব কটি গ্রামে প্রথম ধর্ম প্রচারক রেভারেন্ড এড্উইন রোলেল্ডসের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে তোরণ ও স্মৃতিফলক।
আয়োজন কমিটির সভাপতি পেকলিয়ান বম জানান, বম জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন কৃষ্টি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরতেই খ্রিস্টীয় সুসমাচার প্রচারের শতবর্ষ পূর্তির এ আয়োজন। ১০০ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত, দলীয় নাচ-গান পরিবেশন ও পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করা হবে। তিনি জানান, কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে ১৬টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
রুমা থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, উত্সব উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।