ডিজিটাল বাংলাদেশের বাতিঘর হিসেবে দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি-বেসরকারি সকল সেবা পৌঁছে দেওয়ার এক যুগ উদযাপন করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।দিনের শুরুতেই রঙ বেরঙের বেলুন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম এর শুভ সূচনা করেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।এছাড়াও এক যুগ পূর্তি স্বরণে কেক কাটা হয়।পরে ডিজিটাল সেন্টারের এই দীর্ঘ পথচলার যুগপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে বান্দরবানে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো.লুৎফুর রহমান,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ডা.মো.শেখ ছাদেক,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.এস.এম শাহনেওয়াজ মেহেদী,রাজিব কুমার বিশ্বাস,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এর প্রোগ্রামার (ভারপ্রাপ্ত) ছুরুত আলম আকাশ, জনপ্রতিনিধি,অনলাইন উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এর কর্মকর্তা।
জানা যায় একযোগে দেশের সকল জেলা,উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়েও ডিজিটাল সেন্টারের ১ যুগ পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ সবার জন্য স্মার্ট সেবা’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।বান্দরবান জেলার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়,উদ্ভাবনী বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনগণের দোরগোড়ায় সহজে,দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৪৫০১টি ইউনিয়নে একযোগে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র উদ্বোধন করেন যা বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (UDC) নামে সুপরিচিত।
ইউনিয়ন পর্যায়ে UDC গুলো নাগরিকবৃন্দের জীবনমান পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদানের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে দেশের ৩২৮টি পৌরসভায় পৌর ডিজিটাল সেন্টার (PDC) এবং ১১টি সিটি কর্পোরেশনের ৪৬৫টি ওয়ার্ডে নগর ডিজিটাল সেন্টার (CDC),২০১৮ সালে বিশেষ জনগোষ্ঠীর চাহিদার আলোকে ৬টি স্পেশালাইজড ডিজিটাল সেন্টার (SDC) (গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য গাজীপুরে ৫টি এবং মৎসজীবী শ্রমিকদের জন্য খুলনার রুপসায় ১টি) এবং সৌদি আরবে ১৫টি এক্সপাট্রিয়েট ডিজিটাল সেন্টার (EDC) চালু করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশব্যাপী ৮২৯৭ টি ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত ১৬০৮৭ জন উদ্যোক্তা ব্যাংকিং এবং ই-কমার্স সেবাসহ ৩২০ -এর অধিক সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রদান করছেন।ডিজিটাল সেন্টার থেকে ২০২০ সাল নাগাদ মোট সেবা প্রদান করা হয়েছে ৬৮.৪ কোটি।সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নাগরিকদের ১.৬৮ বিলিয়ন সমপরিমাণ কর্ম ঘন্টা ৯.২৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ খরচ এবং ০.৫ বিলিয়ন সমপরিমাণ যাতায়াত সাশ্রয় হয়েছে।
নাগরিকদের জীবনমান পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিজিটাল সেন্টার ২০১৪ সালে ই-গভর্নমেন্ট ক্যাটাগরিতে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU)-এর ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (WSIS) অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এর প্রোগ্রামার ছুরুত আলম আকাশ জানিয়েছেন,সেরা উদ্যোক্তা নির্বাচনের জন্য গত ১১ নভেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ ও ই-সেবা ক্যাম্পেইন ২০২২ এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা হয়।আগামী ২৫ নভেম্বর ১৫ দিন এর কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।