দেশব্যাপী বিজ্ঞান সচেতনতা সৃষ্টি এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনী মনোভাব সৃষ্টি ও বিকাশের অংশ হিসেবে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে ৪৩তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি’র পক্ষে বান্দরবান কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে চত্বরে অনুষ্ঠিত এই মেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।এসময় মেলা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরী,বান্দরবান প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,প্রেসক্লাব সেক্রেটারি মিনারুল হক,কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ এর সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল হকসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।এসময় প্রধান অতিথি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত স্টলগুলো পরিদর্শন শেষে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। “বিজ্ঞান,প্রযুক্তি ও নৈতিকতাঃ একসূত্রে গাথা” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এই মেলায় সিনিয়র ও জুনিয়র দুটি বিভাগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছেন।দুপুর দুইটায় পুরস্কার বিতরণ ও তিনটায় অরুণ সারকি টাওন হলে বিজ্ঞান ভিত্তিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মেলা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরী।তিনি জানান ১১টি প্রজেক্ট টিম,১৩টি অলিম্পিয়াড টিম এবং ১৩টি কুইজ টিম এই মেলায় অংশ নিচ্ছে।এছাড়াও সরকারি তিনটি প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন।উল্লেখ্য,জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি’র উদ্যোগে “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সোনার মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি”র ব্যানারে বাংলাদেশের প্রখ্যাত গবেষক,ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপক,বাংলাদেশে গনিত অলম্পিয়াড আয়োজনের অন্যতম পথিকৃৎ,বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিশটিংগুউইশড প্রফেসর ড.মোহাম্মদ কায়কোবাদ জেলা পর্যায়ে ৪৩ তম বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষে জেলাপ্রশাসকের আমন্ত্রণে বর্তমানে বান্দরবান অবস্থান করছেন।পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে দুপুর দুইটায় তিনি ছাত্র ছাত্রীদের বিজ্ঞানমনস্ক মনোভাব তৈরির লক্ষ্যে একটি সেশন পরিচালনা করবেন।এরপর দুপুর তিনটায় অরুন সারকী টাউন হলে “বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও নৈতিকতা- একসূত্রে গাঁথা” এই প্রতিপাদ্যের আলোকে একটি সেমিনারে প্রফেসর ড.মোহাম্মদ কায়কোবাদ মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অতঃপর বিকাল ৪ টায় কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।জেলা প্রশাসক,বান্দরবানের এই মহতী উদ্যোগ বান্দরবানের জনগণের জন্য।জেলা প্রশাসক চলতি বছর বিভিন্ন মাসে বাংলাদেশের প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বদের বান্দরবানে আমন্ত্রণ প্রদান করবেন এবং তাদের নিকট বিজ্ঞান,সাহিত্য,মুক্তিযুদ্ধ,ইতিহাস সংক্রান্ত বিভিন্ন জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য শুনে বান্দরবানের তরুণ প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবে এ লক্ষ্যে এক বছর মেয়াদি কর্মসূচি প্রণয়ন করেছেন।এই কর্মসূচির নাম “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সোনার মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি”।জেলা প্রশাসকের বক্তব্য হচ্ছে, ” বর্তমানে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর আওতায় আছে।নীতি নৈতিকতাসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে, তাদেরকে জ্ঞানে গুণে মহিমান্বিত করার উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচিটি নেয়া হয়েছে।এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বগুণ,দেশপ্রেম,মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করা।ইতোমধ্যে মহান একশে ফেব্রুয়ারি ২০২২ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল মোমেনকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়েছে।উদ্দেশ্য ছিলো ভাষার তাৎপর্য এবং সাহিত্যের গভীরতা সবার সামনে উন্মোচন করা।পর্যায়ক্রমে বিভিন্নক্ষেত্রে মহীয়ান ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বান্দরবানের তরুণ প্রজন্মকে গুণী ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে এনে তাদের মধ্যে বিজ্ঞান,সাহিত্য,মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাবে।