বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ হবে দেড় বিলিয়ন ডলার


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :২৪ জুন, ২০১৯ ৩:০৬ : অপরাহ্ণ 631 Views

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে দেশী বিদেশী নয়টি প্রযুক্তি কোম্পানি দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। কোম্পানিগুলো হাইটেক পার্কে মোবাইল, ল্যাপটপ, কমিউনিকেশন ডিভাইস, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, আইওটি, বিপিও, ট্রেনিং সেন্টার, ডেটা সেন্টারসহ বিভিন্ন আইটি পণ্য তৈরির কারখানা স্থাপন করবে। কয়েকটি কারখানা আগামী বছরের মধ্যে উৎপাদনে আসবে। উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে। আর ২৫ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ বছরের শুরুর দিকে কোম্পানিগুলো তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কোম্পানিগুলোর পৃথক চুক্তি সই হয়েছে। আইসিটি খাতে বেসরকারীভাবে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, রবি আজিয়াটা, জেনেক্স, বিজেআইটি সফটওয়্যার, ফেয়ার ইলেকট্রনিক, কেডিএস গ্রুপ, ইন্টারক্লাউড, বিজনেস অটোমেশন, নাসডাক টেকনোলজি ও জেআর এন্টারপ্রাইজ এই কোম্পানিগুলো পৃথক কারখানা তৈরি করবে। কোম্পানিগুলোকে ইতোমধ্যে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হাইটেক পার্কে তারা আগামী ৪০ বছর বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। বেশ কয়েকটি কোম্পানি পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। চুক্তিতে ২০ দশমিক ৫০ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয় নয়টি কোম্পানিকে। সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, আইওটি, বিপিও, ট্রেনিং সেন্টার, ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে। বাংলাদেশের শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা সহজেই কাজের সুযোগ পাবেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, দেশের তরুণ সমাজ মেধাবী হিসেবে ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছে। এই তরুণ সমাজের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ অল্প সময়ের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। ভিশন ২০২১ আগে দেশ পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। ডিজিটাল ডিভাইস বানিয়ে রফতানি করা অসম্ভব কিছু নয়। দেশী বিদেশী এই নয় কোম্পানিতে দেশের ২৫ হাজারের বেশি তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আবার অনেকেই বিশ্বমানের তথ্য প্রযুক্তিবিদ হয়ে বের হতে পারবেন। তরুণ-তরুণীরা সরকারের লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে তারা এক একজন নাম করা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, সরকার দেশে আইসিটি সেক্টরকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই সেক্টরে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে নানা ধরনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০১৮ সালের নেয়া এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। এখন ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। একই সময়ে ২০ লাখের বেশি তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী বা মানবসম্পদ তৈরি করা হবে। এই ২০ লাখ পেশাজীবী জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ জন্য সারাদেশে কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চল থেকেও যেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা কাজ করতে পারেন এমন অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। এ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের এমন কোন ইউনিয়ন থাকবে না যে, যেখানে কানেক্টিভিটি যাবে না। সারা দেশ কানেক্টিভিটির আওতায় চলে আসবে। যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে দেশের অনেক অঞ্চলে কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে। দেশের সকল ইউনিয়ন কানেক্টিভিটির আওতায় চলে আসবে। এর বাইরে বেসরকারী উদ্যোগেও আইসিটি উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। দেশের সব স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। এ বছরের মধ্যে প্রকল্পটির অর্ধেক কাজ বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ পুরোটাই শেষ হবে।

জানা গেছে, হাইটেক পার্কে নয়টি কোম্পানি দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে আইসিটি পণ্য তৈরি করবে। এখানে দেশের ২৫ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এতে দেশের বেকারত্ব অনেকাংশে কমবে। আরও কিছু কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। দেশী বিদেশী যত বিনিয়োগ বাড়বে দেশের বেকারত্ব তত দূর হবে। দেশে আইসিটি খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদে এই সেক্টরে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এমন দিন আসবে হাইটেক পার্কের এক খন্ড জমিও পড়ে থাকবে না। পানি, বিদ্যুত, গ্যাসসহ সব সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এখানে নতুন করে কোন কিছুই করতে হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে সব কিছু করেই রাখা হয়েছে। এখন শুধু বিনিয়োগকারীরা শিল্প স্থাপন করবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!