

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-প্রতিকূল আবহাওয়ায় কয়েকবার পিছিয়ে যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত মহাকাশে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’। নতুন করে আগামী ১০ মে নির্ধারণ করা হয়েছে এর উৎক্ষেপণের তারিখ। ওইদিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১০মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হবে কৃত্রিম উপগ্রহটি।
এরই মধ্যে এ নিয়ে সুখবর জানিয়েছে উৎক্ষেপণের দায়িত্ব পাওয়া মার্কিন প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। গত ৫ মে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব টুইটার পেজে জানায়, উৎক্ষেপণের আগে সবচেয়ে বড় ধাপ পেরিয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’। একে বহনকারী ফ্যালকন ৯ রকেটের ‘স্ট্যাটিক ফায়ার টেস্ট’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
কয়েক দফা পেছানোর পর ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ সম্ভাব্য উৎক্ষেপণের তারিখ ছিল ৪ মে। পরে তা পিছিয়ে ৭ মে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এ তারিখেও উৎক্ষেপণ পিছিয়ে যায়।
আমরা জেনেছি, এই কৃত্রিম উপগ্রহ তার কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু করলে দেশের টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ অন্তত ৪০ ধরনের সেবা দেবে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ট্যারিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল থাকবে।
বাংলাদেশ যখন তার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের তিন বছর আগে মহাকাশ যাত্রার মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছে; ঠিক এর ৬১ বছর আগে মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৫৭ সালে উৎক্ষেপিত সেই কৃত্রিম উপগ্রহটির নাম ছিল স্পুটনিক-১।
আশ্চর্যজনক হলেও মহাকাশে ইতিহাস তৈরি করা সেই নামটির সাথেই আছে বাংলাদেশ। কেননা ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ এবং তা কক্ষপথে রাখার জন্য যে উপগ্রহ কোম্পানি সাথে চুক্তি হয়েছে; সেই কোম্পানির নামও স্পুটনিক। তাদের কাছ থেকেই প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনা হয়েছে।
অাশ্চর্যের বিষয় আরো আছে; স্বাধীনতা অর্জনের পর যে বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিলেন তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার; সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়ের স্বপ্নযাত্রা।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেক ক্ষেত্রেই তার অর্জন ঈর্ষণীয়। সর্বশেষ মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানুষ ও মানবতার নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। কয়টি দেশ এমন সহস দেখাতে পেরেছে?
আমরা মনে করি, খুব কম দেশেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর আগেই আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে এতো এতো উন্নয়নের উদাহরণ আছে। মহাকাশ জয়ের সেই স্মরণীয় ক্ষণে আমরা একটা কথাই বলতে চাই; সাবাস বাংলাদেশ।