বগুড়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু আবাদ হতে যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তাদের আশা তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩শ’ হেক্টরেরও বেশি জমিতে আলুর আবাদ হবে। বাজারে আলুর দাম ভাল এবং এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের মধ্যে আলু চাষে অধিক আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন আলু আবাদে। অপর দিকে আগাম জাতের আলু চাষ করা কৃষকরা এখন অধিক লাভের আশায় ফলন ওঠার অপেক্ষায় রয়েছেন। আগামী মাসের প্রথম দিকে বগুড়া অঞ্চলে আগাম জাতের আলু বাজারে আসবে। এসব কৃষকরা এই আবাদের ভাল দাম পাওয়ার আশায় নতুন সম্ভাবনার দিন গুনছেন। তবে ইতোমধ্যে উত্তরের কয়েকটি জেলার আগাম জাতের আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে।
কৃষক ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এবার আলু আবাদের মৌসুমের শুরুতে ব্যাপক বীজ সঙ্কট থাকলেও এখন এই সঙ্কট নেই বললেই চলে। কৃষকদের উদ্যমের কাছে বীজ সরবরাহজনিত জটিলতা পরাভূত হয়েছে। বিএডিসি বগুড়া বীজ বিপণন বিভাগের উপ-পরিচালক শহিদুল্লাহ আল মামুন জানান, নবেম্বরর শুরুতে বীজের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে ডিলারদের সঙ্গে কিছুটা সমস্যা হওয়ায় সরবরাহে জটিলতা সৃষ্টি হলেও তা দূর হয়েছে। ২০ নবেম্বরর মধ্যে বগুড়া ও জয়পুরহাট এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বীজ আলু সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বগুড়ায় দেয়া হয়েছে প্রায় ২৩শ’ মেট্রিক টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপপরিচালক মোঃ দুলাল হোসেন জানান, বগুড়ায় আলু বীজের সঙ্কট নেই। এবার জেলায় মোট ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা করা হয়। এক্ষেত্রে আলু বীজের প্রয়োজন ছিল প্রায় ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। বিএডিসি ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং কৃষক পর্যায়ে সংরক্ষণ করা বীজ এই চাহিদা মিটিয়েছে বলে তিনি জানান।
এছাড়া, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বগুড়ায় আরও ৩ থেকে ৪ শ’ হেক্টর জমিতে আলুর বেশি আবাদ হয়ে ৬০ হাজার হেক্টরও ছাড়িয়ে যাবে। তিনি জানান, এটি বগুড়ায় আলু আবাদের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে রেকর্ড হবে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫৭ ভাগ জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আলুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে কৃষি বিভাগ ধারণা করছে। বগুড়ার শাখারিয়া ইউনিয়নের নামাবালা দুল শেখ, কুমার পাড়ার রফিকুল, কাশেম আলী ও সর্দার পাড়ার রেজাউল করিম আগুর জাতের আলু যেমন আবাদ করেছেন, তেমনি সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় ভাষায় নমলা জাতের আলুর চাষও করছেন। তাদের আশা এবার আলুর দাম ও আবাদ দুটিই ভাল হবে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় জমি এবার দেরিতে তৈরি করায় আগুর জাতের আলু আবাদে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়ে তারা বললেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ও চলতি মাসের শেষের দিকে বগুড়ার আগুর জাতের আলু বাজারে আসবে। শেখেরকোলা ইউনিয়নের ভাণ্ডর পাইকার গ্রামের কৃষক খলিল এবার সবজি চাষ করে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। শুধু মুলার আগাম চাষ করেই ৭০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এবার তাকিয়ে রয়েছেন আলুর আগাম আবাদের ওপর। দু’ বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘায় আগাম জাতের আলু ও ১২ শতক জমিতে সংরক্ষণের আলু আবাদ করেছেন। আগুর বা আগাম জাতের আলুর জমিতে আবার একই সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার চাষও করেছেন। কৃষক খলিল আরও জানালেন, তাদের এলাকায় সবাই আগাম জাতের আলুর সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেন। তাদের জমিতে সারাবছরেই সবজির আবাদ থাকে। তবে শুধু খলিল নয়, ভাল দামের আশায় বগুড়া অঞ্চলে কৃষকরা এবার দ্বিগুণ উৎসাহে আলু আবাদ করছেন। কারণ এখন পর্যন্ত পুরাতন আলুর প্রতি কেজির দাম ৪০ টাকার নিচে নামেনি। এ কারণে কৃষক আশা এবার আলুর দাম ভাল অবস্থায় থাকবে।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.