চট্রগ্রাম অফিসঃ-ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে এক মাসের মাথায় তাসফিয়া নামে এক স্কুলছাত্রীকে শবেবরাতের রাতে ডেকে নিয়ে খুন করেছে আদনান মির্জা ও তার সহযোগীরা।আজ বুধবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।নিহত স্কুলছাত্রীর নাম তাসফিয়া।সে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার ডেইলপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মো.আমিনের মেয়ে।তারা নগরীর খুলশী থানাধীন ও আর নিজাম রোড এলাকার বসবাস করেন।দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তাসফিয়া সবার বড়।সে নগরীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত।স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্র জানায়,ফেসবুক বন্ধু আদনান মির্জা বন্ধুত্বের ‘মাসপূর্তি’ উদযাপনের প্রলোভন দিয়ে তাসফিয়াকে মঙ্গলবার শবেবরাতের দিন ডেকে নেয়।নিয়ে যায় একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে।এরপর সহযোগীদের নিয়ে আদনান তাসফিয়াকে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদনানকে তাসফিয়ার পরিবারের লোকজন আটকও করেছিল।কিন্তু তাসফিয়াকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে সে (আদনান) কৌশলে সটকে পড়ে।তাকে ছাড়িয়ে নিতে ফিরোজ ও আকরাম নামে চিহ্নিত দুই সন্ত্রাসীও প্রভাববিস্তার করে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।এদিকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পাথরের ওপর থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রী তাসফিয়ার চোখেমুখে আঁচড়ের চিহ্ন ছিল।ধারণা করা হচ্ছে,তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে।পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।পুলিশ ও তাসফিয়ার পারিবারিক সূত্র জানায়, এক মাস আগে আদনান মির্জা নামে এক তরুণের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় তাসফিয়ার।এর সূত্র ধরেই আদনান মঙ্গলবার পবিত্র শবেবরাতের দিন বিকেল ৫টায় তাসফিয়াকে ঘর থেকে কৌশলে বের করে।বন্ধুত্বের মাসপূর্তি উদযাপনে চায়নিজ রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর প্রলোভন দেয়।বিকাল পাঁচটার দিকে তাসফিয়া যখন বাসা থেকে বের হচ্ছিল তখন তার (তাসফিয়ার) মা আছরের নামাজ পড়ছিলেন।নামাজ থেকে উঠে তাসফিয়াকে না পেয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।সূত্র জানায়, আদনান নামে কোনো এক তরুণের সঙ্গে তাসফিয়ার যে ফেসবুকে সম্পর্ক হয়েছে সে বিষয়টি কিছুদিন আগেই টের পায় পরিবার।তাই সন্দেহবশত ফেসবুক আইডি থেকে নম্বর নিয়ে কৌশলে আদনানকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তাসিফয়াদের বাসায় ডেকে আনা হয়।এ সময় তাসফিয়ার বাবা-চাচারা আদনানকে চাপ দেয় তাসফিয়া কোথায় তা জানাতে।না হয় আদনানের বাবাকে ডেকে বিচার দেয়া হবে বলেও হুশিয়ার করা হয়।এ সময় আদনান তার পরিচিত বন্ধু-বান্ধবদের জানায় তাকে আটকে রাখার বিষয়টি।পরে মুরাদপুরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ফিরোজ ও আকরামসহ কয়েকজন তাসফিয়াদের আদনান আর নিজাম আবাসিক এলাকার বাসায় এসে আদনানকে ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে আদনান তাকে ছেড়ে দিলে তাসফিয়া আধাঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আসবে বলে জানায়।একদিকে সন্ত্রাসীদের হুমকি,অন্যদিকে তাসফিয়াকে ফিরে পেতে আকুল তাসফিয়ার পরিবার অদনানকে সরল বিশ্বাসে ছেড়ে দেয়।কিন্তু এরপর থেকেই আদনান ফোন বন্ধ করে দেয়।তাসফিয়ার পরিবার জানায়,আদনানের পরিবার সম্পর্কে বা তার বাড়ি কোথায়,সে কী করে সে বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।কেবল ফেসবুক থেকে নম্বর নিয়েই তারা আদনানকে আটক করেছিল।সূত্র জানায়,এরপর থেকে মঙ্গলবার শবেবরাতের দিন এবাদত ছেড়ে তারা এখানে-সেখানে পাগলের মতো খুঁজে বেড়ায় তাসফিয়াকে।কিন্তু কোথাও তার খোঁজ পাচ্ছিল না।বুধবার সকালে পতেঙ্গায় অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধার হওয়ার খবর পাওয়ার পর তাসফিয়ার বাবা-চাচারা পতেঙ্গা থানায় যান।সেখানে গিয়েই তারা দেখতে পান তাসফিয়ার লাশ।পতেঙ্গা থানার এসআই আনোয়ার হোসেন জানান,সকালে সৈকতের ১৮ নম্বর ব্রিজের উত্তরপাশে পাথরের ওপর তরুণীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন।তারা পুলিশকে খবর দেয়।পরে তরুণীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।পুলিশ জানায়,মঙ্গলবার রাতে গোলপাহাড়ের মোড়ে অবস্থিত চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্ট থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়।ওই রেস্টুরেন্ট থেকে তাসফিয়া ও আদনানকে একসঙ্গে বের হতে দেখা যায়।এ সময় আদনানকে বিল দিতেও দেখা যায়। ওই ভিডিও ফুটেজটি ঠিক কোন মুহূর্তের তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.