মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার বিকালে পৌরসভার তাকিয়া রোড এলাকার নিজ কার্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়। নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার পর থেকেই তার দিকে অভিযোগের তীর বিদ্ধ হচ্ছিল। মামলার আসামিদের জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে তার নাম আসে।
এদিকে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করার পর বেরিয়ে আসে তার বিরুদ্ধে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা রীতিমত অবাক করেছে সবাইকে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলে থাকলেও আগে তিনি জাতীয় পার্টির ফেনী জেলার সদস্য পদে ছিলেন। ১৯৯৭ সালে রুহুল আমিন আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ নয় বছর তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন। এরপর দেশে ফিরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা তিনবছর দায়িত্বে ছিলেন। এদিকে তিনি পূর্বে জাতীয় পার্টির জেলা সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর ছত্রছায়ায় তিনি ২০১৮ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে অধিষ্ঠ হোন।
এদিকে আরো বেশি কিছু তথ্য বের হয়ে এসেছে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। রুহুল আমিনের পরিবারে তার দুইভাই আছে। তাদের দুইজনই এলাকায় বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত। তার বড় ভাই আবুল কাসেম যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সদস্য পদে আছেন। তার ছোট ভাই সুফিয়ান সোনাগাজীতে থেকে স্থানীয় বিএনপির কর্মী হিসেবে আছেন। রুহুল আমিনের তিন ছেলে মেয়ে ও তার স্ত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। বছরে দুইবার তিনি সেখানে যাতায়াত করেন। এছাড়াও রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে মৃত্যুঘাতী মাদক ইয়াবার সাথে সখ্যতারও সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের সম্পাদক খোরশেদ আলম ও কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী দুলালের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।