২১ জানুয়ারি ২০২১, ১২:০০ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
জেলার ৩৫টি মামলায় বিচারাধীন ৪৯ শিশুকে সংশোধনের জন্য কারাগারের পরিবর্তে বই উপহার দিয়ে পরিবারের কাছে পাঠিয়েছেন আদালত। সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন বুধবার এই ব্যতিক্রমী রায় দেন। রায়ের পর বিচারকের পক্ষ থেকে শিশুদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। এর আগে আরও ১৪ জন শিশুকে সংশোধনের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নান্টু রায় যুগান্তরকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মুক্তি পাওয়ার পর আদালতের দেওয়া শর্ত প্রতিপালন করবে বলে জানায় শিশুরা। আদালত সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দায়ের করা ৩৫টি মামলায় ৪৯ জন শিশুর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারায় অভিযোগ এনে মামলায় জড়ানো হয়েছিল। ছোট অভিযোগে এসব শিশুরকে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হতো। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়। স্বাভাবিক জীবনে বেড়ে ওঠা হুমকির মধ্যে পড়ে। ওই শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন আদালত। সংশোধনের জন্য ১০টি শর্ত দিয়ে ওইসব শিশুকে কারাগারের পরিবর্তে পরিবারের হাতে তুলে দেন। শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-একশত মনীষীর জীবনী নামকগ্রস্থ পাঠ, বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ মেনে চলা, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, ২০টি গাছ লাগানো, মাদক থেকে দূরে থাকা ও ভবিষ্যতে কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো। এদিকে, মুক্তি পাওয়ার পরবর্তী এক বছর সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকবে শিশুরা। সুনামগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ওইসব শিশুকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে তাদেরকে যথাযথ তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতা দেয়া হবে। আদালত থেকে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলো যাতে তারা প্রতিপালন করে সেই বিষয়গুলো মনিটরিং করা হবে। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও দায়িত্ব রয়েছে এসব শর্ত পালনে তাদের সহযোগিতা করা, পাশে থাকা। তিন মাস পরপর আদালতে এই বিষয়ে আমাকে প্রতিবেদন দিতে হবে। সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় যুগান্তরকে বলেন, আদালত শিশু অপরাধ মামলায় যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন। রায় ঘোষণা শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেনের দেওয়া উপহার ১০০ মনীষীর জীবনীগ্রস্থ শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর একই আদালত থেকে পারিবারিক বিরোধ ও নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা ৫০টি মামলার আসামিদের সাজা না দিয়ে দাম্পত্য জীবনে ফিরে যাওয়ার শর্তে মুক্তি দিয়েছেন। সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেনের দেওয়া ওই ব্যতিক্রমধর্মী রায়ে স্বামীরা নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে যান। তাদের বিরুদ্ধে মামলাকারী স্ত্রীরা এজলাসের সামনে দাঁড়িয়ে ফুল নিয়ে স্বামীদের বরণ করে নেন।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.