পাবনা-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট কে হবেন, এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন।আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের আওরঙ্গবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত ব্যক্তিরা হলেন ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আওয়ামী লীগের সুলতান খাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা লস্কর খাঁ (৬৫) ও তাঁর সমর্থক আবদুল মালেক শেখ (৪৫)। এ ছাড়া এ ঘটনায় দুই নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান ও পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান ও বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী সুলতান খাঁর পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও কোন্দল চলছিল। আগামী সংসদ নির্বাচনে ওই এলাকায় কে হবেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ আরো বেড়ে যায়। এরই জের ধরে আজ সন্ধ্যায় সাঈদ ও সুলতান পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে আওয়ামী লীগ কর্মী সুলতান খাঁর পক্ষের সমর্থক আবদুল মালেক শেখ ও সুলতান খাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা লস্কর খাঁ ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গুলিবিদ্ধ প্রিয়া খাতুন (৩৫) ও হালিমা খাতুনকে (৫০) পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও অন্যদের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।এ ঘটনার পর এলাকায় তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে।এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।স্থানীয় সূত্র জানায়, সুলতান খাঁ আগে জাসদ ইনু গ্রুপের পাবনা সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বছর খানেক আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার পর থেকেই এই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
এ ব্যাপারে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান তাঁর পক্ষের লোকজনের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের খবরের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, সুলতান একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চরাঞ্চলের ডাকাত। আর যে মালেক মারা গেছে সেও পুলিশ ও র্যাবের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তারা বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মাওলানা সুবহানের বিরুদ্ধে ওই এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী আক্কাস আলী সাক্ষ্য দেন। সুলতান গংরা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের পক্ষ নিয়ে আক্কাস আলীকে হুমকি দেওয়ায় সংঘর্ষ হয়।আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ আরো বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার জন্য সুলতান গ্রুপ এ সব কর্মকাণ্ড করছে। সুলতান কখনো আওয়ামী লীগ করেনি এবং তিনি জাসদের সমর্থক।সাঈদ দাবি করেন, তাঁর পক্ষের কেউ এ হামলার সঙ্গে জড়িত নন।বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী সুলতান খাঁ বলেন, সাঈদরা বংশগত সন্ত্রাসী। বিনা উসকানিতে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে তারা মরিয়া। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে আগে দলকে দুর্বল করতে দলের ত্যাগী নেতাদের হত্যা করছে। সেই কারণে আমার বাড়ির সামনে এসে বসে থাকা লোকজনের ওপর গুলি চালিয়েছে। এতে আবার বাবা লস্কর খাঁ ও আমার সমর্থক আবদুল মালেক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।গুলিবিদ্ধ হয়েছে মহিলাসহ কমপক্ষে ১০/১২ জন।পাবনা সদর আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুজ্জামান রকি বলেন, বিষয়টির সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তবে দুইপক্ষই আওয়ামী লীগের বলে তিনি জানান।কামরুজ্জামান রকি বলেন, বালু উত্তোলন ও জলাশয় দখল এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই।এদিকে, বন্দুকযুদ্ধে হতাহতের ঘটনায় ভাড়ারা এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কারা হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে পুলিশ।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.