প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের দেশের প্রকৃত ইতিহাস শেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন,যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী (হায়েনা) গোষ্ঠী বাঙালির অর্জনগুলো আবারও ছিনিয়ে নিতে না পারে।তিনি বলেন, ‘এ জন্য দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে হবে।’ গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে শেখ হাসিনা একথা বলেন।গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। খবর বাসস।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদেরকে ইতিহাসটা শিখাতে হবে। ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা দিবস, বাংলা ভাষার জন্য এদেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে গেছে। যে দিবসটা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এটা কিন্ত প্রজন্মের পর প্রজন্মের সব শিশুদের জানতে হবে এবং শিখাতে হবে।তিনি বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এই বিজয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে যে আত্মত্যাগ সেই আত্মত্যাগ সম্পর্কেও সবাইকে জানতে হবে। তাহলেই তাদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে।জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ এবং জাতীয় শিশু দিবস সহ প্রত্যেকটি জাতীয় দিবস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে দীক্ষা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলবো আমাদের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নিতে হবে ছেলে-মেয়েসহ সবাই যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই সত্যগুলো জানতে পারে। কারণ ২১টি বছরতো সবকিছুই নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আজকে সেটাই প্রমাণ হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার কখনো কোনো হায়েনার দল বাঙালির যে অর্জন সেগুলোকে যেন কেড়ে নিতে না পারে। তার জন্য দেশবাসীকে সাথে নিয়ে উন্নয়নের এই গতিধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে।আর এই উন্নয়নের প্রত্যেকটি ধারার সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করেই তাদের জন্য কাজ করে যেতে হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে দারিদ্রের হার ছিল ৪০ ভাগেরও ওপরে তাকে আমরা এখন ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। সেনসাস রিপোর্ট বের হলে এই সংখ্যা আরো কমে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।তিনি বলেন, তার সরকার জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমর্থ হওয়ার পরপরই পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে তাই আজকের দিনে সকলের কাছেই তিনি নিজ পরিমণ্ডলে কিছু না কিছু উৎপাদন করার আহবান জানান।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বার্তাটা শুধু আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছেই নয়, আওয়ামী লীগের মাধ্যমে সমগ্র দেশের কাছে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। যার যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে এবং যে যেখানে যতটুকু পারেন উৎপাদন করবেন। অর্থাৎ কারো কাছে ভিক্ষা চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ চলবেনা, কারণ জাতির পিতা বলেছিলেন ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে মাটি আছে এবং মানুষ আছে তাই দিয়েই আমরা নিজেদের দেশকে গড়ে তুলবো’- এটাই ছিল জাতির পিতার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়কার অঙ্গীকার। আর তাই ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে মাত্র দুই বছরের মধ্যেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে আমরা দেখিয়েছি আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর এবং আমরা চেষ্টা করলেই পারি। কিন্তু সেটাও আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।সরকারপ্রধান বলেন, গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার পদক্ষেপ হিসেবে ’৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ঘর বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরো দেড় লাখ ঘর তৈরির পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ৫০ হাজার ঘর তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডে ৫ কোটি টাকা দিয়ে একটি ফান্ড করে দেয়া হয়েছে। সেখানে শিল্পপতি, ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক মালিকরা অনেকে অনুদান দিয়েছেন- যেখান থেকে ২ কাঠা জমিসহ বিনে পয়সায় ঘর করে দেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তিনি আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।তিনি বলেন, প্রত্যেকের এলাকাতেই এ ধরনের ঘর তৈরি হচ্ছে। এই করোনাভাইরাসের সময় যেমন প্রণোদনা দিয়েছি পাশাপাশি এই ঘরগুলো নির্মাণ কাজে যারা সম্পৃক্ত সেখানেও একটা আর্থিক স্বচ্ছলতা মানুষ পেয়েছে। কাজেই সেখানেও আপনাদের কিন্তু একটা দায়িত্ব রয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষা এবং গৃহহীনদের-দরিদ্র মানুষের পাশে থাকার জন্যও আপনাদের স্ব স্ব অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টা আপনাদের সবসম