মঙ্গলবার গণভবনে কৃষক লীগ আয়োজিত সারা দেশে বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ আরও সবুজ হোক, আরও সুন্দর হোক এবং এর পরিবেশটা যেন ঠিক থাকে। এই বাংলাদেশের পরিবেশ এবং প্রতিবেশ ঠিক রেখে এর সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমরা করতে চাই।
সেই উন্নয়নের জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।তিনি বলেন, সরকার পরিবেশ এবং প্রতিবেশ উন্নত করে সুন্দর দেশ গঠনে দেশকে সবুজে আচ্ছাদিত করে ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে।
৯৬ সালে দেশের বনভূমির পরিমাণ মাত্র ৭ শতাংশ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে তার সরকারের প্রচেষ্টায় দেশের মোট বনভূমির পরিমাণ ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কেননা সারা দেশে সামাজিক বনায়ন থেকে শুরু করে মানুষের গৃহে বাগান তৈরি করার প্রচেষ্টাও তার সরকার বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইভাবে আমরা চাই আমাদের বনায়ন বৃদ্ধি পাবে, পরিবেশ উন্নত হবে এবং প্রতিবেশ সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশটা সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তিনি এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এমনকি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা-কর্মী, সমর্থক এবং শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি সকলকে আহ্বান জানাব যারা মুজিব আদর্শে বিশ্বাস করেন প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগাবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকেই অন্তত এই তিনটি গাছ লাগাবেন-একটা বনজ, একটা ফলজ এবং একটা ভেষজ গাছ। কারণ গাছ আপনাদের আর্থিকভাবে সচ্ছলতা দেবে, পাশাপাশি পরিবেশও রক্ষা হবে।
আবার পুষ্টির জোগানও দেবে। কাজেই সেদিকে লক্ষ রেখেই এই তিনটি গাছ লাগানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কন্যা অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে গণভবনে দুটি গাছের চারা রোপণ করে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ১ আষাঢ় আমরা দলের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ করি। ১৯৮৩ সালে আমাদের দলের সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন প্রতিবছরই এই দিনে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। আর এই দায়িত্বটা পড়েছে আমাদের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ওপর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময়ই দেশের এবং জাতির কল্যাণে কাজ করে। কেননা এই সংগঠনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এবং তিনিই এই দেশ স্বাধীন করে গেছেন। তার (জাতির পিতা) আদর্শ অনুসরণ করেই আমরা সকল পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশটাকে সাজাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র সাড়ে ৩ বছর তিনি সময় পান। দুর্ভাগ্য আমাদের ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট তাকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নেয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে এই বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি দেশব্যাপী বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ায় কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এবারেও সারা দেশে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ করা হবে।
কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ্র এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: বাসস।