আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর যে উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে তা সফল হতে দেব না। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর আওয়ামী লীগ, দলীয় সমর্থক, মুক্তিযোদ্ধা এবং সেনাবাহিনীর যথাযথ ভূমিকা না থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান দেশের কোথাও কখনো সরাসরি যুদ্ধ করেনি এবং খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া হবে না। তাদের উদ্দেশ্য তো ছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস হয়ে যাক, সেটাই করতে দেব না।’আলোচনাসভায় আবেগে আপ্লুত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা, মা, ভাইবোন সব হারিয়ে যেদিন বাংলার মাটিতে পা দিলাম, আমাকেও তো আসতে অনেক বাধা দিয়েছে। তার পরও জোর করে যখন আসলাম, হ্যাঁ, আমি সেই চেনামুখগুলো পাইনি। বরং দেশে এসে আমি কবর পেলাম। তখন আমি পেয়েছি লাখো মানুষ আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের ভালোবাসা, তাদের আস্থা, বিশ্বাস। এজন্য আমি বলতে পারি আওয়ামী লীগ আমার পরিবার। বাংলাদেশটাই আমার পরিবার। আমি সেইভাবেই বাংলাদেশের মানুষকে দেখি। আমি যেটুকু কাজ করতে পারব মনে হয় আমার আব্বা, আম্মা তারা দেখবে, নিশ্চয়ই দেখবে, দেখেন। হয়তো তাদের আত্মাটা শান্তি পাবে। আমি সেই চিন্তা করেই সব কাজ করি। এ জন্য আমার কোনো মৃত্যুভয়ও নেই, কোনো আকাঙ্ক্ষাও নেই, কোনো চাওয়া পাওয়ারও কিছু নেই। আমার জন্য আমি কিছু করব? করতেও চাই না।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনার সময়ে কারা মানুষের পাশে আছে? আর কত দল শুধু বিবৃতি, বক্তৃতাই দিয়ে যাচ্ছে। কারণ আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, প্রাইভেট টেলিভিশন করে দিয়েছি, প্রাইভেট রেডিও করে দিয়েছি। একটা অবাধ সুযোগ আছে সবার কথা বলার। কথা বলেই যাচ্ছে। কিন্তু মাঠে কয়টা মানুষ আছে? মানুষের পাশে কে আছে? দুঃসময়ে কে দাঁড়াচ্ছে? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই দাঁড়াচ্ছে।’বিএনপির মারামারি ধস্তাধস্তির অভ্যাস এখনো যায়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি জানে না সেখানে (চন্দ্রিমা উদ্যানে) জিয়া নাই, জিয়ার লাশ নাই? তাহলে এত নাটক করে কেন? খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি কখনো তার লাশ দেখেছে? ওখানে একটা বাক্স নিয়ে এসেছিল। সেখানে গিয়ে মারামারি ধস্তাধস্তি কেন? মারামারি ধস্তাধস্তির অভ্যাস তাদের এখনো যায়নি।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল ও উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন ও উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।