দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স চান প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৪:১৫ : অপরাহ্ণ 248 Views
প্রশাসনে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স চাই। দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশাসনে ভালো কাজের জন্য থাকবে পুরস্কার এবং অন্যায় করলে শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এমন কড়া বার্তা জানিয়ে সম্প্রতি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা সচিবদের ‘সচিব-সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের পরিচালনায় ওই সভায় উপস্থিত ৭৬ জন সচিবের মধ্যে ১৩ বিষয়ে ১৭ জন বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ২০ দফা নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীতে নিয়মিত সচিব-সভা করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে একাধিক দিনব্যাপী সচিব-সভা হতে পারে। ওইসব নির্দেশনা উল্লেখ করে ৮ সেপ্টেম্বর সব সচিবকে চিঠি দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও সিদ্ধান্তসমূহ উল্লেখ করে বলা হয়- দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জনগণের সেবক হিসেবে জনকল্যাণে আত্মনিয়োগে সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করুন। দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভালো কাজ করলে পুরস্কার প্রদান করতে হবে। আর অন্যায় করলে শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠির বিষয়ে সচিব-সভায় উপস্থিত থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সভার মূল ফোকাসই ছিল অনিয়ম-দুর্নীতি যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। জিরো টলারেন্স নীতিতে যাচ্ছে সরকার। যার যার মন্ত্রণালয় ও অধীন দফতরের দুর্নীতির জন্য সে মন্ত্রণালয়ের সচিবকেই দায় নিতে হবে। এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়। চিঠিতে আরও বলা হয়, স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত ও কার্যকর করতে হবে।

এ বিষয়ে সচিবদের অধিকতর সজাগ ও সম্পৃক্ত থাকতে হবে। সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির অপব্যবহার যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য চুক্তির শর্তাবলির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। চুক্তির অস্পষ্টতা পরিহারসহ নির্দিষ্ট সময় পরপর শর্তসমূহ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে সময়োপযোগী করতে হবে। সামরিক শাসনামলে জারি করা ৫১টি অধ্যাদেশ ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে অদ্যাবধি অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে তা নিষ্পত্তি করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সেল সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পুরাতন জেলখানায় পাগলা গারদের নিকটবর্তী যে সেলে রাখা হতো তা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার নির্দেশ দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, পাহাড় ও টিলা-অধ্যুষিত এলাকার পরিবেশ রক্ষা, ভূমিধস প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়ে খনন, নাব্য পুনরুদ্ধার, দখলমুক্তসহ জলজ অঞ্চল-তীরবর্তী ভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, কৃষিজমির পরিমাণ সীমিত বিধায় অল্প জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এলাকাভিত্তিক ঘোষিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে হবে। শিল্পায়নের কারণে যেন পরিবেশ দূষণ না হয় এবং কৃষিজমি হ্রাস না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে ফসলের ন্যায্যমূল্য অর্জন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। করোনাকালীন অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং উন্নয়নের গতি বজায় রাখার জন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!