বান্দরবানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ১০টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সোমবার (১৩ জুন) বান্দরবান এর সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে বান্দরবান জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম বলেন,কাউকে পেছনে রেখে একা ভালো থাকা যায় না।প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে হৃদয়ে ধারণ করে কিভাবে ১০ টি বিশেষ উদ্যোগ এর সুফল জনগণ পেতে পারে এই বিষয়টি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন,সবাই মিলে বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলায় পরিনত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।আমাদের চিন্তা-চেতনায়-মননে যেটিকে শ্রেষ্ঠ মনে হবে তাই করবো আমরা।বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিং ইয়ং ম্রো,সিভিল সার্জন ডা.নীহার রঞ্জন নন্দী,বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো.ইসলাম বেবি,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুরাইয়া আক্তার সুইটি এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো.লুৎফুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য সচিব আরো বলেন,এমন অনেকেরই দেখেছি যাদের সম্পদ আছে কিন্তু ভোগ করতে পারেনি,বিনিয়োগ করতে পারেনি।অথচ তার পরবর্তী প্রজন্ম এ সকল সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে।তিনি বলেন,আমাদের প্রত্যেককে একটি স্বপ্নের জায়গা তৈরি করতে হবে।আমি নয়,আমাদের জন্য ভাবতে হবে।সচিব বলেন,উন্নয়নের স্বার্থে নিজের সাথে নিজের প্রতিযোগিতা হবে।নিজেই হবো নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী।তিনি বলেন,ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরি করতে যাচ্ছি আমরা।এতে ৫টি সুবিধা থাকবে।তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষার দিকে আমাদের বেশি নজর দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের শ্রমবাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন,প্রধানমন্ত্রীর ১০ টি বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাধা কোথায়? কি ধরণের সুপারিশ আছে তা খুঁজে বের করার জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন,বর্তমান সরকার নারী বান্ধব সরকার।১৯৮২ সালের আগে কোন নারী প্রশাসন ক্যাডারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন না।নারীর উপর ভরসা করে নারীদের প্রশাসন ক্যাডারে পদায়ন করা হয়েছে।জেলা প্রশাসক বলেন,১৯৯০ সালের আগে পুলিশ বিভাগেও কোন নারীর পদায়ন ছিল না। তিনি বলেন,বর্তমানে ৯ জন সচিব এবং ৮ জন জেলাপ্রশাসক দায়িত্ব নিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ নারীকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে।জেলা প্রশাসক বলেন,২০০৯ সাল থেকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছি।এখন পেপারলেস কার্যক্রম চলমান আছে। এক সময় সাংবাদিকরা লাল ফিতার দৌরাত্ম্য উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করতেন।বর্তমানে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য নেই।কারণ এখন সব কাজই ই-ফাইলিং এর গুরুত্ব বাড়ছে।যার কারণে সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে এবং দুর্নীতি কমে আসছে।তিনি আরও বলেন,ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে বর্তমানে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ব্যাংকিং সুবিধা ভোগ করছেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের আয়োজন এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট এর সহযোগিতায় আয়োজিত কর্মশালায় বান্দরবান জেলার সকল সরকারি কার্যালয়ের প্রধানগণ,৭টি উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,চেম্বার প্রতিনিধি,এনজিও এবং প্রেসক্লাব প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১২০ জন প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ এবং নতুন সম্ভাবনা চিহ্নিতকরনসহ উদ্যোগসমূহের বহুল প্রচারে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনাসহ করনীয় নির্ধারণ করে লিখিতভাবে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ১০টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমনটাই আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন আয়োজকরা।
উল্লেখ্য,বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্তি,বাসস্থান,শিক্ষা, চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।যারমধ্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক,আশ্রয়ন প্রকল্প,ডিজিটাল বাংলাদেশ,শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি,নারীর ক্ষমতায়ন,সবার জন্য বিদ্যুৎ,কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশুর মানসিক বিকাশ,সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি,পরিবেশ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি অন্যতম যা প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভাবিত বিশেষ দশটি উদ্যোগ নামে পরিচিত।