স্পোর্টস ডেস্কঃ-ভিত গড়ে দিলেন তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসান।বোলিংয়ে সুরটা বেধে দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।অনেক দিন পর দেখা গেল দুর্দান্ত ফিল্ডিং।শ্রীলঙ্কাকে সহজেই হারাল তিন বিভাগে নিজেদের মেলে ধরা বাংলাদেশ।কলম্বো টেস্টে হারের ধাক্কা সামলানোর আগেই আরেকটি হারের তিক্ত স্বাদ পেল শ্রীলঙ্কা। উজ্জ্বীবিত বাংলাদেশের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে হারল ৯০ রানে।বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথম কোনো ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করে জিততে ব্যর্থ হল সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের চারটি জয়ই ছিল লক্ষ্য তাড়া করে।রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩২৪ রান করে বাংলাদেশ।জবাবে ৪৬ ওভার ১ বলে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।তামিম ইকবালের অষ্টম শতক আর তার সঙ্গে সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসানের দুটি দারুণ জুটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও শ্রীলঙ্কায় প্রথমবারের মতো তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।অর্ধশতক আসে সাকিব,সাব্বিরের ব্যাট থেকে।শেষটায় ঝড় তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বিরের সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়েন তামিম।বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান চতুর্থ উইকেটে ১৪৪ রানের জুটি উপহার দেন সাকিবের সঙ্গে।ডাম্বুলায় তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ার কোনো নজির নেই।কাজটি করতে যে শুরু দরকার ছিল তার কাছাকাছিও যেতে পারেনি শ্রীলঙ্কা মাশরাফি ও অভিষিক্ত মেহেদী হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য।নতুন বলে তাদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ঘাম ঝরাতে হয় স্বাগতিকদের।শ্রীলঙ্কা ইনিংসের তৃতীয় বলেই আঘাত হানেন মাশরাফি। তার দারুণ বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি দানুশকা গুনাথিলাকা।রান আসছিল না,চাপ বাড়ছিল।উইকেটের পিছন থেকে বল ঝুলিয়ে দিতে বললেন মুশফিকুর রহিম।দিলেন মিরাজ,ফাঁদে পড়লেন কুসল মেন্ডিস।চমৎকার ক্যাচে তাকে ফেরালেন বদলি ফিল্ডার শুভাগত হোম চৌধুরী।তৃতীয় ওভারেই নিজের প্রথম ওয়ানডে উইকেট পেলেন মিরাজ।ব্যক্তিগত ৬ রানে বেনিফিট অব ডাউট পেয়ে স্টাম্পিং থেকে বেঁচে যাওয়া উপুল থারাঙ্গা বেশি দূর যেতে পারেননি।আক্রমণে এসেই লঙ্কান অধিনায়ককে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সহজতম ক্যাচ নেন অধিনায়ক মাশরাফি।১১ ওভারে ৩১ রানে নেই লঙ্কানদের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান।১৫ ওভার শেষে ওভার প্রতি স্বাগতিকদের প্রয়োজনীয়তা দাঁড়ায় ৮ করে।সেখান থেকে আর কখনও নামেনি,কেবল বেড়েছে,ম্যাচ আরও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে গেছে।প্রথম চার ওভার শেষে মাশরাফির বোলিং ফিগার ছিল এমন ৪-২-৬-১।পুরো ম্যাচে মেডেন ওভার হয়েছে ওই দুটিই।৫৬ রানের জুটিতে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন দিনেশ চান্দিমাল ও আসেলা গুনারত্নে।প্রান্ত বদল করে খেলতে পারছিলেন কিন্তু সংগ্রাম করতে হচ্ছিল বাউন্ডারির জন্য।সেই বাউন্ডারির আশায় সাকিবকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মোসাদ্দেক হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় গুনারত্নের ইনিংস।নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে চান্দিমালকে বিদায় করেন মিরাজ।সুইপ করতে গিয়ে পারেননি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।সহজ ক্যাচ দুই হাতে তালুবন্দি করেন সৌম্য সরকার।পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা মুস্তাফিজুর রহমানের বলে অসংখ্যবার অল্পের জন্য ব্যাটের কানা নেয়নি।আচমকা তার স্লোয়ারে ছক্কা মেরে চমকে দেন মিলিন্দা সিরিবর্ধনে।পরের বলে তাকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নেন বাঁহাতি পেসার।প্রায় ২০ গজ দূরে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তালুবন্দি করেন শুভাগত।মাশরাফির ওপর চড়াও হতে গিয়ে অফ কাটার বুঝতে পারেননি সচিথ পাথিরানা।সহজ ক্যাচ উঠে যায় কাভারে,মাহমুদউল্লাহর কাছে।থিসারা পেরেরাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সুরঙ্গা লাকমল।মুস্তাফিজকে উড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন সাব্বির রহমানকে সহজ ক্যাচ দিয়ে।আগের দিন সেন্টার উইকেটে অনুশীলনে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন থিসারা।ম্যাচেও নিতে আসতে পারলেন সেগুলোকে।২৭ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় আসে তার অর্ধশতক।আড়াই বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডেতে পঞ্চাশ পেলেন এই মারকুটে অলরাউন্ডার।মুস্তাফিজের সরাসরি থ্রোয়ে লাকশান সান্দাকান রান আউট হলে জয়ের আরও কাছে চলে আসে বাংলাদেশ।৩৫ বলে ৫৫ রান করা থিসারাকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের থামিয়ে দেন মুস্তাফিজ।৫৬ রান দিয়ে বাঁহাতি এই পেসার নেন ৩ উইকেট।মাশরাফি ও মিরাজের শিকার দুটি করে। সাকিব ও তাসকিন নেন একটি করে উইকেট।ব্যাটসম্যানদের এনে দেওয়া পুঁজি ব্যর্থ হতে দেননি বোলাররা।ফিল্ডিংও এদিন ছিল দুর্দান্ত।তামিমের জায়গায় প্রায় পুরোটা সময় বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে থাকা শুভাগতও দেখিয়েছেন জয়ের জন্য দলের সব সদস্য কতটা মরিয়া।ম্যাচের আগের দিন মাশরাফি বলেছিলেন,ডাম্বুলার বাজে স্মৃতি ভুলতে চান ভালো খেলে।এবার হয়তো পারবেন তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:-
বাংলাদেশ:-৫০ ওভারে ৩২৪/৫ (তামিম ১২৭, সৌম্য ১০, সাব্বির ৫৪, মুশফিক ১, সাকিব ৭২, মোসাদ্দেক ২৪*, মাহমুদউল্লাহ ১৩*; লাকমল ২/৪৫, কুমারা ১/৭৪,থিসারা ০/৬৩, পাথিরানা ০/২৭, সান্দাকান ১/৪৩,গুনারত্নে ১/৪০, গুনাথিলাকা ০/২২)
শ্রীলঙ্কা:- ৪৫.১ ওভারে ২৩৪ (গুনাথিলাকা ০, থারাঙ্গা ১৯,মেন্ডিস ৪,চান্দিমাল ৫৯,গুনারত্নে ২৪, সিরিবর্ধনে ২২,পাথিরানা ৩১,থিসারা ৫৫,লাকমল ৮, সান্দাকান ৩, কুমারা ০*; মাশরাফি ২/৩৫, মিরাজ ২/৪৩, তাসকিন ১/৪১, সাকিব ১/৩৩, মুস্তাফিজ ৩/৫৬, মোসাদ্দেক ০/২১)
ফল:- বাংলাদেশ ৯০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.