রোববার মিরপুর-শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের ছুঁড়ে দেওয়া ১৯৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু বাংলাদেশের। সপ্তম ওভারে কেমার রোচের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হেটমেয়ারের কাছে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। তবে থার্ড আম্পায়ার সেটিকে নো বল ঘোষণা করেন।
এর কিছু পরেই রোস্তন চেজের বলে বিশুর হাতে ধরা পড়েন তামিম। একটু পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই থমাসের বলে সরাসরি বোল্ড হন ইমরুল কায়েস।
প্রাথমিক চাপ সামলে দলের হাল ধরেন মুশফিক ও লিটন দাস। তাদের ৪৭ রানের জুটি ভাঙে লিটনের বিদায়ে। দলের ৮৯ রানে কিমো পলের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি। ব্যক্তিগত ৪১ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
এরপর মুশফিককে সঙ্গী করে দলের রান দ্রুত বাড়াতে থাকেন সাকিব। দলীয় ১৪৬ রানে রোভম্যান পাওয়েলের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সাকিব ২৬ বলে ৩০ রান করতে চারটি চার মারেন। সাকিবের পরে মুশফিকের সাথী হন সৌম্য। সে ও উত্তেজনা ছড়িয়ে রোভম্যান পাওয়েলের বলে রোস্তন চেজের হাত বল তুলে দিয়ে ১৯ রানে ঘরের পথ ধরেন।
শুরুতে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে নেমেই সাফল্য তুলে নেয় বাংলাদেশ। দলীয় একশ রানের আগেই সফরকারীরা হারায় চার উইকেট। শুরুটা করেছিলেন সাকিব আল হাসান। তাকে আক্রমণ করতে গিয়ে কিরণ পাওয়েল ক্যাচ তুলে দেন রুবেলের হাতে। এরপরেই চলতে থাকে মাশরাফির আগুন ঝড়া বোলিং। উইন্ডিজের প্রথম উইকেট পতনের পর জোড়া আঘাত করেন টাইগার দলপতি।
মাশরাফির বলে আক্রমণ করতে গেলে তামিমের এক দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন ড্যারেন ব্রাভো। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে সেট হওয়া শাই হোপসকেও মিরাজের তালুবন্দিতে শিকার করেন মাশরাফি। ৭৮ রানে তিন উইকেট হারানোর পর দলের স্কোরকে গতি আনতে ব্যাট হাতে নামেন ভয়ংকর হেটমেয়ার।
আর এতেই মাশরাফি পৌঁছে যায় আর এক মাইল ফলকে ওয়ানডেতে ২৫৩ উইকেট ছিল ভারতীয় কিংবদন্তি অলরাউন্ডার কপিল দেবের সংগ্রহে। এই কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে যেতে মাশরাফির দরকার ছিল মাত্র দুটি উইকেট। মিরপুরে সেটিই করে দেখালেন ম্যাশ। ওয়ানডেতে সবমিলিয়ে ২৫৩ উইকেট নিতে ২২৫ ম্যাচ খেলতে হয়েছিল কপিল দেবকে। এদিক থেকেও এগিয়ে আছেন মাশরাফি। ২০০তম ম্যাচে মাঠে নেমেই কপিল দেবকে টপকে গেছেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক।
তারপর আঘাত হানেন মিরাজ। দলীয় ৯৪ রানে কিছু বুঝে উঠার আগে মিরাজ বোল্ড করে দেন এই বাঁহাতি হার্ড হিটার ভয়ংকর হেটমেয়ারকে। এই নিয়ে চলতি সিরিজে পাঁচ ইনিংসেই হেটমেয়ারকে আউট করলেন মিরাজ। দুই টেস্টের চার ইনিংসেই তিনি এই ক্যারিবিয়ানকে পরাস্ত করেন। এরপরই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে লিটনের শিকারে পরিণত করেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকবার জীবন পাওয়া সামুয়েলস আক্রমণ করার চেষ্টা করলে রুবেলের বলে বাউন্ডারি লাইনে লিটন দাসের তালুবন্দি হন।
এরপরই কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোস্তন চেজ ও কিমো পলের ব্যাটে ভর করে ৬১ রানের জুটি গড়ে তারা। পুরো ম্যাচ ভালো বল করেও উইকেট না পাওয়া মুস্তাফিজ চেজকে ফিরিয়ে দেন মিরাজের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। এরপর আরো দুটি উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কিমো পল ও কেমার রোচ ঝড়ে ১৯৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি ৩টি, মুস্তাফিজ ৩টি, সাকিব-মিরাজ ও রুবেল প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে শাই হোপস ৪৩, চেজ ৩২ ও কিমো পল।