‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ এবং বিএনপির অপপ্রচার


প্রকাশের সময় :১১ মে, ২০১৮ ৯:২০ : অপরাহ্ণ 835 Views

সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-মহাকাশ বিজয়ের পথে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ বাংলাদেশের প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশের মহাকাশ বিজয়ের প্রথম ধাপের সাক্ষী হতে পারাটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অনেক গর্বের।আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা এখন জীবনের লক্ষ্য বলার সময় ‘আমি একদিন স্যাটেলাইট প্রকৌশলী হবো’ বলার মত অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে মহাকাশ বিজয়ের পথে আমাদের প্রথম অর্জন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এর মাধ্যমে। অর্থনৈতিক লাভ ক্ষতির হিসেব চুকিয়ে এই ‘অনুপ্রেরণা’টাই ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ থেকে সব থেকে বড় প্রাপ্তি। রাজনৈতিক সীমানা ছাড়িয়ে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ আমাদের সার্বজনীন অর্জন।

বাস্তবতার আলোকে তবুও লাভ ক্ষতির ব্যাপারটা আলোচনায় চলে আসে।সেই আলোচনা সমালোচনার জায়গা থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে এক ধরণের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পে খাজনার চেয়ে বাজনাটাই বেশি। অর্থাৎ যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পে অর্থের দিক দিয়ে সে পরিমান লাভবান হবে না বাংলাদেশ। বিএনপির পক্ষ থেকে অপপ্রচারের ধরণটা এমন, ‘বছরে মাত্র দেড় কোটি টাকা বাঁচাতে ২২শ কোটি টাকা দিয়ে এই স্যাটেলাইট কার স্বার্থে পাঠানো হল?’

 

এমন নিচুশ্রেনীর মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিল করতে চাওয়ার মতো একটা রাজনৈতিক দল আমাদের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মোটামোটি জনপ্রিয়, সেটি আমাদের দুর্ভাগ্য।যেকোন ব্যাপার নিয়ে অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন সমালোচনা কিংবা বিরোধিতা করা বিএনপির বদঅভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।উল্লেখ্য,এই বিএনপি সরকারের অদক্ষতার জন্য দ্রুত গতির ইন্টারনেট দুনিয়ায় বাংলাদেশ সংযোজন ৫ বছর পিছিয়ে পড়েছিল।২০০০-২০০৫ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বিদেশী কোম্পানি সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করে বাংলাদেশকে দ্রুত গতির ইন্টারনেটের আওতায় আনার জন্য চুক্তি করতে চাইলে তৎকালীন বিএনপি সরকার ঐ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের “ডিজিটাল বাংলাদেশ” রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ঐ চুক্তি বাস্তবায়ন করে।

 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর দায়িত্বপ্রাপ্তদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রথম কৃত্তিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ এবং সেবা পরিচালনার জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক।এর মধ্যে সরকার দেবে ১ হাজার ৩১৫ দশমিক ৫১ কোটি টাকা।এ ছাড়া বিডার্স ফাইন্যান্সিং ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।দেশের প্রথম স্যাটেলাইটটিতে থাকবে ৪০ ট্রান্সপন্ডার সক্ষমতা।এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে ব্যবহার করবে। আর ২০টি ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দেবে।এছাড়া বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল প্রতি বছর অন্যান্য দেশের স্যাটেলাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রায় দেড়শো কোটি টাকা সমপরিমাণ অর্থ ভাড়া হিসেবে পরিশোধ করে।নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হলে এ অর্থ বাংলাদেশেই থেকে যাবে। ২০টি ট্রান্সপন্ডার ভুটান, নেপাল এবং এশিয়ার অন্য অংশে কিরঘিজস্তান, তাজাকিস্তানের মতো দেশেও ভাড়া দেওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আয় করতে পারবে। আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যেই এই প্রকল্পের সকল খরচ উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।উল্লেখ্য মহাকাশে স্যাটেলাইট স্থাপন করার পরিকল্পনা সর্বপ্রথম গ্রহণ করা হয় ১৯৯৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসায় স্যাটেলাইট স্থাপনের পরিকল্পনার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।(((বাংলার দর্পণ)))

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!