সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহ।সারি সারি পাহাড় সেই সঙ্গে রোদ বৃষ্টি আর মেঘের অপূর্ব মিতালি।বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের মনমাতানো এই দৃশ্য ভোলার নয়।তবে চিম্বুক পাহাড়ে গড়ে উঠা পর্যটনের নতুন নতুন স্থানগুলো সবারই দৃষ্টি কাড়ছে।অনন্য নির্মাণ শৈলীর এসব পর্যটন কেন্দ্রগুলো জেলার বিকাশমান পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।তারই ধারাবাহিকতায় থানচির জীবননগর এলাকায় নীল দিগন্ত নামে আরও একটি পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।গতকাল শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক লাল রংয়ের ফিতা কেটে এই পর্যটন কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক এর ঐকান্তিক ইচ্ছার প্রতিফলন কে রূপ দিতে থানচি উপজেলা প্রশাসনের ব্যাবস্থাপনায় পর্যটন কেন্দ্র টি বাস্তবে রুপ নিলো।জেলা প্রশাসকের নির্দেশে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সায়েম ও বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ এর কর্ম পরিকল্পনায় নতুন এই পর্যটন কেন্দ্রটি সাজানো হয়েছে।বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৫২ কিঃমিঃ দুরে থানচি উপজেলার নিকটবর্তী জীবননগরের নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটির বিশেষত্ব হচ্ছে চিম্বুক পাহাড়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরির কাছেই জীবন নগর এলাকা।চন্দ্র পাহাড়ের কোল ঘেষে গড়ে উঠা নতুন এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত কেউক্রাডং ও তাজিংডং রেঞ্জ দেখা যায়।এছাড়া দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড় শ্রেণি ও বর্ষায় মেঘ-বৃষ্টি আর রোদের মিতালিও চোখে পড়বে এই স্থান থেকে।চারদিকে অবারিত সবুজ পাহাড়,যে দিকে চোখ যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতেই হৃদয় জুড়িয়ে যায়।এই পাহাড়ের চূড়া থেকে সারি সারি ছোটবড় পাহাড় আর শঙ্খ নদীর মণমুগ্ধকর দৃশ্যের উপভোগ এবং শরীরের উপর নীল আকাশের মেঘ ভেসে বেড়ায়।নীল দিগন্ত পাহাড়ের চূড়াটিকে সংস্কার করে পর্যটক উপযোগী করে তোলা ছিলো ভীষণ কষ্টের কিন্তু বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও থানচি উপজেলা প্রশাসনের নিরলস পরিশ্রম আর অদম্য ইচ্ছায় পর্যটন কেন্দ্রটি নবরূপ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো।নীল দিগন্তের উদ্বোধন কালে এসময় উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক পত্নী সুবর্ণা চৌধুরী,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মফিদুল আলম,থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যাহ্লাচিং মারমা,থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সায়েম,জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ ও থানচি উপজেলার দুই ভাইসচেয়ারম্যান এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা।নীল দিগন্ত উদ্বোধন করে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন,বান্দরবানের অর্থনীতির প্রধান উৎসই হচ্ছে পর্যটন।পর্যটনকে যত বেশি আর্কষণীয় করা যাবে, পর্যটকদেরকে যত বেশি সুযোগ সুবিধা দেয়া যাবে,ততই এ এলাকায় পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাবে।সে লক্ষ্যেই আমরা এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলছি।যে সমস্ত স্থান গুলো খুবই আকর্ষণীয় এবং চারিদিকের দৃশ্য দৃষ্টিগোচর হয়,সে সমস্ত স্থান যাতে করে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারে,সে লক্ষ্যেই উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায়,জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সহায়তায় আমরা আজ “নীল দিগন্ত” পর্যটন কেন্দ্রটিকে নতুন ভাবে গড়ে তুলেছি।এসময় তিনি বান্দরবানের ডিম পাহাড়,নাফা কুম এবং রেমাক্রীসহ বিভিন্ন স্থানে আরো নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা জানান।এসময় তিনি আরও বলেন,প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান।বান্দরবান জেলাকে পর্যটকদের কাছে আকৃষ্ট করে তুলতে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।নীলাচল,মেঘলা,শৈলপ্রপাত, প্রান্তিক লেকের সৌন্দর্য বর্ধনে জেলা প্রশাসন নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটিও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটিকে বাস্তবে রুপ দিতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রত্যেক কে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।এসময় জেলা প্রশাসক পর্যটন কেন্দ্রটিকে পরিচিত করে তুলতে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা কামনা করেন।এবিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান,বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও থানচি উপজেলা প্রশাসনের যৌথ তত্বাবধানে এই নতুন পর্যটন কেন্দ্রটি পরিচালিত হবে।প্রাথমিকভাবে উদ্ধোধন করা হলেও এখানে পর্যটকদের জন্য নির্মিত হবে একটি মান সম্মত খাবার রেস্টুরেন্ট।তিনি আরো জানান,পুরো এই পর্যটন কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশে প্রচুর পরিমান বৃক্ষরোপন করা হবে,আর পর্যটকেরা যাতে পাহাড়ের পরিবেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারে তার জন্য নির্মাণ করা হবে আধুনিক বিভিন্ন স্থাপনা।এদিকে নতুন এই পর্যটন কেন্দ্র উদ্ধোধনের ফলে এই সড়কে পর্যটকদের জন্য নতুন একটি পর্যটন স্পট বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকেরা জেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান।উল্লেখ্য প্রায় সাড়ে ৩ একর জায়গার উপর পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে।এখানে ভিউ পয়েন্ট,হাঁটার পথ,গোলঘর,টিকিট কাউন্টার,ক্যান্টিন ও অনন্য নির্মাণশৈলীর প্রবেশদ্বার রয়েছে।জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।জীবন নগর এলাকার এই স্থানটি থেকে প্রকৃতির অপূর্ব মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।বিশেষ করে বর্ষায় এর রুপ হয়ে উঠে অনন্য সুন্দর।পাশের চন্দ্র পাহাড় সবুজ দিগন্তের এই পর্যটন কেন্দ্রটিকে নতুন রুপ দিয়েছে।নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র থেকে এই স্থানটির দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।জেলা শহর থেকে জিপ,ট্যাক্সি বা বাসে করে সহজেই এই স্থানটিতে যাওয়া যায়।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.