বান্দরবান অফিসঃ-বাংলাদেশ সীমান্তে হঠাৎ করেই সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছে মিয়ানমার। গত কয়েকদিন ধরেই পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে ভারী অস্ত্রসহ নতুন করে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে মিয়ানমার।
বান্দরবানের থানছি ও আলীকদম সীমান্ত, নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা, আশারতলি, তুমব্রু ও ঘুনধুম সীমান্তে সেনা সদস্য ছাড়াও সীমান্ত পুলিশ বিজিপির সদস্য সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো হত্যাযজ্ঞের এক বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ আগস্ট। এ সময় মিয়ানমারে প্রতিশোধমূলক হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় সীমান্তে সেনা বৃদ্ধি ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা ও টহল বাড়িয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গা শিবিরের পাশেও সেনা সংখ্যা ও টহল বাড়ানো হয়েছে। হঠাৎ করে সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়ানোর কারণে জিরো লাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানান, মিয়ানমার পুরো সীমান্তেই হাঠাৎ করে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। তাদের কাছে যে খবর রয়েছে, তাতে আগামী ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরসা নতুন করে হামলা করতে পারে এমন খবর তাদের মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে।
এর সূত্র ধরেই মিয়ানমার হয়তো সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবিও সতর্ক অবস্থায় থেকে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। কিছু কিছু জায়গায় বিজিবির সদস্য সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
তবে এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে উত্তেজনা নেই বলে বিজিবির এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সীমান্তে যথারীতি দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নিয়মিত যৌথ টহল অব্যহত রয়েছে।
বিজিবির বান্দরবান সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইকবাল হোসেন জানান, হাঠাৎ করে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধিতে সীমান্তে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। সীমান্তের পয়েন্টগুলোতে বিজিবি সদস্যরা টহল বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে তুমব্রু সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গা আবদুর রহমান জানান, শুক্রবার সকাল থেকে সীমান্তে সেনাদের টহল দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেও এই পরিস্থিতি ছিল না। অনেক স্থানে ভারী ও হালকা অস্ত্র নিয়ে সেনা সদস্যরা টহল দিচ্ছে। বিজিপির সদস্য সংখ্যাও জিরো লাইনের কাছে বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত থেকে রোহিঙ্গাদের সরে যাওয়ার জন্য আগের মতোই তারা মাইকিং করছে।
রোহিঙ্গা আলী আহম্মদ জানান, গত দুদিন থেকে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ও টহল বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাদের ওপর হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন নো-ম্যান্স ল্যান্ডের অনেক রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গারা জানান, আগামী ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনায় নতুন করে হামলা হতে পারে এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে মিয়ানমারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যম এই গুজব ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ মিলিশিয়ারা। এতে কমপক্ষে ২৪ হাজার রোহিঙ্গা নিহত ও ১৮ হাজার রোহিঙ্গা নারী ধর্ষিত হন। পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2025 Chttimes.com. All rights reserved.