বান্দরবান অফিসঃ-বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের নামটি জড়িয়ে রয়েছে। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পূর্বকালীন সময় থেকে যুদ্ধকালীন পুরো সময়টাতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশের পাশে থেকেছে ভারত। যেদেশ তার নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে সীমান্ত উন্মুক্ত করে আমাদের আশ্রয় দিয়েছিলো সেই দেশের সীমান্ত রক্ষীদের হাতে এখন কেনো আমার দেশের মানুষের লাশ পড়বে? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই।
বিভিন্ন ইস্যুতে দু’দেশের সম্পর্কে টানপোড়ানোর সৃষ্টি হলেও দু’দেশের সম্পর্কের মাঝে বিষফোঁড়া হলো সীমান্ত হত্যা। সীমান্ত হত্যা নিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে এই সীমান্ত হত্যা অনেক কমেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৪,০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যা পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম স্থল সীমান্ত। শুধু পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই ২,২১৭ কিমি. সীমান্ত আছে বাংলাদেশের। সীমান্তের মানুষ বিভিন্ন কারণে এই এলাকা ব্যবহার করে। এর মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন ছোটখাটো এবং গুরুতর আন্তঃসীমান্ত অপরাধে নিয়োজিত। আর এই অপরাধ দমনের বিষয়টাতে এসেই বাঁধে সমস্যা, ঘটে সীমান্ত হত্যা। বর্তমান সরকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
২০০৮ সালে ভারত সরকার ও বিএসএফ বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করেছিল যে- সীমান্তে প্রাণঘাতী কোনও অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না। পরবর্তীতে ২০১১ সালে বিএসএফ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পাচারকারী ও অবৈধপথে সীমান্ত পার হওয়া নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার চুক্তিও করে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে সীমান্তে সবচেয়ে বেশি হত্যা হয়েছে। তাদের শাসনামলে ২০০৬ সালে ১৪৬, ২০০৫ সালে ১০৪, ২০০৪ সালে ১৩৫, ২০০৩ সালে ৪৩, ২০০২ সালে ১০৫ ও ২০০১ সালে ৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়। অর্থাৎ এই পাঁচ বছরেই নিহত হয় ৬২৭ জন বাংলাদেশি।
এছাড়া সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই বছরে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় মোট ১৮২ জন। এর মধ্যে ২০০৮ সালে ৬২ জন এবং ২০০৭ সালে ১২০ জন নিহত হয়। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সীমান্ত হত্যা বন্ধে চুক্তি করার পর এই হত্যাকাণ্ডের পরিমাণ কমে আসে।
২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত সীমান্তে হত্যা হয় ৬২৭ টি। আবার ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ২৬৮টি। আবার ২০১৪ থেকে ২০১৮ নাগাদ হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ১৩৫টি। তুলনামূলক চিত্র থেকে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অপেক্ষাকৃত কম হত্যাকাণ্ড হয়েছে এবং এই বছর দু’জন বিএসএফ দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। যেখানে ২০০১ থেকে ২০০৬ অর্থাৎ পাঁচ বছরে হত্যার সংখ্যা ৬২৭, সেখানে বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলের দশ বছরে হত্যার সংখ্যা ৪০৩টি। আবার ২০১১ সালের চুক্তির পর হত্যাকাণ্ড অনেকটাই কমে এসেছে। ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত বিএসএফ এর গুলিতে একটি হত্যাকাণ্ডও সংগঠিত হয়নি যা দু’দেশের সরকারের এক অন্যতম প্রধান সফলতা।
শেখ হাসিনা সরকারের কুটনৈতিক সম্পর্কের প্রশংসা করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করায় বর্তমানে সীমান্তে হত্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে যা সরকারের কুটনৈতিক নীতির প্রশংসার দাবিদার।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2025 Chttimes.com. All rights reserved.