জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে। নতুন এ অর্থবছরের বাজেটে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।এতে প্রায় ১৪ লাখ উপকারভোগী বাড়িয়ে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।সামাজিক সুরক্ষায় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ প্রায় প্রতিটি উপখাতে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আর্থিক পরিমাণও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।বর্তমানে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে।তবে এই খাতের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে একই উপকারভোগী একাধিক কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছে।বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাজেট বক্তৃতায় এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার জন্য উপকারভোগী বাছাই করার ওপর জোর দেয়ার কথা জানানো হয়েছে।সরকার দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস করতে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে।এই কৌশলপত্র বাস্তবায়নের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে। দরিদ্র জনগণের অবস্থা উন্নয়নের জন্য সরকার প্রতি বছর সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে।দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী বলে ধারণা করা হয়। এই তথ্য আমলে নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান মোট জনবলের ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের নিয়োগ দিলে সে প্রতিষ্ঠানের প্রদেয় কর পাঁচ শতাংশ রেয়াত দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে।গত অর্থবছরে চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত ও সেবা গ্রহণে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা না রাখলে অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের বিধান করা হয়েছিল।এবার সেই কর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও এনজিওতে আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সুবিধা স্থাপনের সুযোগ পায় সেদিকে লক্ষ রেখে এ প্রস্তাব ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।সামাজিক সুরক্ষা খাতে আগামী অর্থবছরে মোট ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ৬৪ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা।বর্তমান অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৯ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা।প্রস্তাবিত বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীভাতা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা চার লাখ বাড়িয়ে ৪৪ লাখ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা তিন লাখ বাড়িয়ে ১৭ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে বাজেট বক্তৃতায়। অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের বর্তমান ভাতাভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ। আগামী অর্থবছরে তা আরো ৫ লাখ ৪৫ হাজার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির ক্ষেত্রে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এই তিন স্তরে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার বাড়িয়ে এক লাখে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ৫০ টাকা করে বাড়িয়ে প্রাথমিক স্তরে উপবৃত্তি ৭৫০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৯০০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ছয় হাজার জনে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেট বক্তৃতায়।বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ২০ হাজার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।চলতি অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৪ হাজার।ক্যানসার,কিডনি,লিভার,স্ট্রোক ও জন্মগত হৃদরোগীর উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার থেকে দ্বিগুণ বাড়ানো হচ্ছে। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার বাড়িয়ে ৫০ হাজারে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে।দরিদ্র মার মাতৃত্বকালীন ভাতার উপকারভোগী ৭০ হাজার জন বাড়িয়ে ৭ লাখ ৭০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই ভাতা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন এই ভাতার মেয়াদ তিন বছর। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তার আওতায় উপকারভোগী ২৫ হাজার বাড়িয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।সামাজিক সুরক্ষা খাতের প্রায় সব উপখাতে বাজেট বাড়ানো হলেও ভিজিডি কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়নি।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.