বান্দরবান অফিসঃ-বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। এই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে কৃষি। শুধু অর্থনীতিই নয় দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা যোগান দিয়ে থাকে এই কৃষি খাত। বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে এই কৃষিকে কেন্দ্র করে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছে। এর ধারাবাহিকতায় আধুনিকায়ন করা হয়েছে কৃষি খাত।
কৃষকরা যাতে তাদের সেবাসমূহ দোরগোড়ায় পেয়ে যায় এজন্য তৈরী করা হয়েছে ‘কৃষি বাতায়ন।’ এর মাধ্যমে কৃষক তাদের সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যাও তুলে ধরতে পারবেন এবং সমাধান পাবেন। খোঁজ পাবে দেশি বিদেশী বিভিন্ন বীজ ও শস্যের। সারা দেশের মানুষের খাদ্যের যোগান যারা দিচ্ছেন তারা যাতে অবহেলায় না থাকে সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে। দেশের কৃষকগণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যাতে তাদের কৃষি কাজের পাশাপাশি প্রয়োজনে জীবনমান উন্নয়নের কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিয়ে আসা হয়েছে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে এ হিসাব খোলা হয়েছে। এ হিসাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে কৃষকরা।
২০১০ সালে ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট খোলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হিসাব খোলা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। এ বছর কৃষকের ১০ টাকার একাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে আগের থেকে ১ লাখ ৯৪ হাজার। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে কৃষকের ১০ টাকার একাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৮৩ হাজার। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ লাখ ৩৭ হাজার। তবে ৫০ টাকা ও ১০০ টাকার একাউন্ট মিলে সুবিধাপ্রাপ্ত বিশেষ এসব একাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার ২১৭টি।
দেশের ব্যাংকিং খাত অনুপ্রাণিত করার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতাভোগী, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র জীবনবীমা পলিসি গ্রহীতা, অতি দরিদ্র উপকারভোগী, অতি-দরিদ্র মহিলা উপকারভোগী, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সুবিধাভোগী, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুস্থ পুনর্বাসনের অনুদানপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, চামড়া ও পাদুকা শিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিক, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুস্থ, পুনর্বাসনের অনুদানপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, স্কুলের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী পথশিশু-কিশোর, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অনুদানপ্রাপ্ত দুস্থ ব্যক্তি, আইলা দুর্গত ব্যক্তি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সব প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় হিসাব খোলার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ন্যূনতম ১০ টাকা, ৫০ টাকা এবং ১০০ টাকা জমা দিয়ে এসব হিসাব খোলার নিয়ম করা হয়। এগুলোয় সর্বনিন্ম জমার বাধ্যবাধকতাও তুলে দেওয়া হয়।
১০ টাকার অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয় কৃষকদের মাধ্যমে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ৯২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯০ জন কৃষক এই হিসাবে জমা রেখেছেন ২৮২ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। তৈরি পোশাকশিল্পের ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯২২ শ্রমিক জমা রেখেছেন ১১৫ কোটি টাকা। ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৪৬ জন প্রতিবন্ধী ১৮ কোটি জমা করেছেন। এছাড়া ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় ৩৩ হাজার ১২৭ জন ১০৩ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র জীবন বীমা কর্মসূচি গ্রহীতারা ১২ কোটি টাকা, এলএসবিপিসি কারিগররা ২ কোটি ৩ লাখ টাকা, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ৭০ লাখ টাকা জমা রেখেছেন।
দেশের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকারি ৮টি ব্যাংক। এগুলো হচ্ছে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। দেশে কৃষকদের পাশাপাশি অন্যান্য স্বল্প আয়ের মানুষও যাতে সহজে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে পারে সেদিকে নজর দিয়েছে বর্তমান সরকার। ভবিষ্যতে কৃষকসহ অন্যান্য স্বল্প আয়ের মানুষ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করতে পারবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সকলে।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.